জেলা অন্যতম প্রসিদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ কতৃপক্ষ আহাম্মদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ এস্টেটের বিরুদ্ধে সরকারি খাল ভরাট করে অবৈধ ভাবে খাস ভূমি দখল করে দোকান তৈরি করে ভাড়া বাণিজ্যে করার অভিযোগ উঠেছে।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নির্দেশে হাজিগঞ্জ উপজেলার যে সব সরকারি খাস ভূমি অবৈধ ভাবে দখল করা হয়েছে। সেই সব দখলদারের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মেহেদী হাসান মানিকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উপজেলা ও পৌর ভূমি অফিসের ভূমি কর্মকর্তারা এরই মধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রতিবেদন আকারে প্রণয়ন শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আরও বেশ কয়েকটি স্থানে খাস সম্পত্তিতে অবৈধ দখলদাররা দোকান তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভূমি অফিসের একাধিক সূত্র।
সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ দখলদারের তৈরি করা তালিকার একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
সেই তালিকা থেকে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত সাবেক ২১৩ নং মকিমাবাদ মৌজার ৯০৩ নং এস এ দাগের সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত খাল শ্রেণীর ৫ শতাংশ ৩০ পয়েন্ট খাস ভূমি অবৈধ ভাবে দখল করেছে আহাম্মদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ স্টেট কতৃপক্ষ। বর্তামানে বড় মসজিদ ও আশেপাশে কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা করছে আহাম্মদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ এস্টেট। যার মোতোয়ালি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড.আলমগীর কবির পাটোয়ারী।
তালিকায় সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট প্রস্থের ১ শতাংশ ৬৫ পয়েন্ট খাস ভূমি অবৈধ ভাবে দখল করে ঘর তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ ফুট প্রস্থে ২ শতাংশ ৭৩ পয়েন্ট খাস ভূমির উপর অবৈধ ভাবে দখল করে ১০ টি দোকান তৈরি করেছে যা থেকে বছরে কয়েক লক্ষ টাকা ভাড়া তুলে নিচ্ছে আহাম্মদ আলী পাটোয়ার ওয়াকফ এস্টেট কতৃপক্ষ। ৪০ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১০ ফুট প্রস্থের একটি জেনারটর রাখার ঘর তৈরি করা হয়েছে। যা. ৯২ পয়েন্ট জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
এসব সরকারি খাস সম্পত্তির উপর দোকান তৈরি করে গত এক দশক ধরে ভাড়া তুলে নিচ্ছেন তারা
গত ৩১ আগষ্ট রাতের আঁধারে নতুন করে ইটের দেওয়াল দিয়ে ঘড় নির্মাণ করে আহমদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ এস্টেট কতৃপক্ষ। পরের দিন ১ সেপ্টেম্বর সকালে এই খবর পেয়ে সরজমিনে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা গিয়ে অবৈধভাবে দখল করা ঘর ভেঙে ফেলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সরকারি এই খালটি দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো। নদীর সাথে খালের সংযোগ ছিলো। ফলে জোয়ার-ভাটা বইতো এই খালে। কিন্তু বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে পাশের মার্কেট ও আশেপাশের বাসা বাড়ির সকল ধরনের ময়লা আবর্জনা এই খালে নিয়মিত ফেলে খাল ভরাট করে ফেলছে। যার ফলে এখন খালের কোন অস্তিত্ব নেই। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কয়েকজন স্বার্থন্বেষী মহল অবৈধভাবে দোকান তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া তুলে নিচ্ছে।
সরকারি খাল অবৈধভাবে দখল করে দোকান তৈরি করার বিষয়ে আহমদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ এস্টেটের এর মোতোয়াল্লী ড. আলমগীর কবির পাটোয়ারী মুঠোফোনে জানান, আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানায়নি।
এই বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি মেহেদী হাসান মানিক বলেন, সরকারি খাস ভূমি এটা সবাই ব্যবহার করবে। সেটা খাল হোক আর যাই হোক এটা কেউ দখল করা অবৈধ
কিন্তু কোন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত কাজে কিংবা ব্যক্তির স্বার্থে সরকারি খাস ভূমি দখল করতে পারবে না। যারা অবৈধ ভাবে সরকারি খাল বা খাস ভূমি দখল করেছে। ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে আমরা তাদের তালিকা তৈরি করছি। পরবর্তী আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
ReplyForward
|