খন্দকার আরিফ :
মোস্তফা কামাল পাটওয়ারী (৬২), বয়সের দীর্ঘ সময় থেকেছেন প্রবাসে। প্রশ্ন মানুষ প্রবাস যায় অর্থ কামানোর জন্য এবং নিজের পরিবার পরিজনকে নিয়ে সুখে দিন যাপনের জন্য। কিন্ত সে বিপত্তি যদি বাঁধে পিতার সাথে? হ্যা এমনটি ঘটেছে হাজীগঞ্জে। সৌদি আরবে কর্মের উপার্জিত সকল অর্থ পাঠানো হয় পিতার কাছে। দেশে থেকে প্রবাসী ছেলের সকল অর্থ যখন পিতা নিজেই নিজের আখের গোছান।
অসহায়ত্ব প্রবাসী মোস্তফার অর্থ দিয়ে পিতা এলাকায় নিজের নামে সম্পদ গড়েন। তার নামে এক তিল পরিমান সম্পদ রেজিষ্ট্রি করেননি পাষন্ড পিতা। দেশে থেকে পিতা বাড়ি ও সম্পদ গড়লেও সকল কিছু থেকে প্রবাসী ছেলেকে বঞ্চিত রাখা হয়। প্রায় ৩ বছর পূর্বে শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারনে দেশে পেরেন প্রবাসী মোস্তফা কামাল পাটওয়ারী। তিনি দেশে এসেও অর্থভাবে করাতে পারেননি উন্নত চিকিৎসা। দুঃখে দুঃখে মরতে হয়েছে রেমিট্যান্স যোদ্ধা মোস্তফা পাটওয়ারীকে। এমন ঘটনা হাজীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের মাতৈন পূর্বপাড়া পাটওয়ারী বাড়িতে ঘটেছে
তার মৃত্যুর পূর্বে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়েএলাকার বিভিন্ন স্থানে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করেন এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা। ঠাই হয়নি নিজ বসত বাড়িতে। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বিনা চিকিৎসা মৃত্যু বরণ করেন তিনি। সোমবার (৬ফেব্রুয়ারী) স্বামীর মরদেহ নিয়ে শশুরলায়ে অবুঝ দুই সন্তানদের নিয়ে প্রতিবাদ জানান স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসে এবং দেশে এসে কিডনি জনিত রোগে ভুগছিলেন দুই সন্তানের জনক প্রবাসী মোস্তফা কামাল পাটওয়ারী। এলাকার অর্থশালী এবং জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। এরপরও জম্মদাতা পিতা প্রবাসী মোস্তাফার অর্থ ও সম্পদ থেকে চিকিৎসা বাবদ কোন অর্থ দেননি।চিকিৎসাধীনবস্থায় প্রবাসী মোস্তফা পাটওয়ারী সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পরও জম্মদাতা পিতা এবং তার আত্মীয় স্বজনরা মৃতদেহের পাশে সাড়া দেননি। দুপুরে এলাকার লোকজন লাশ দাফন কার্যে এগিয়ে যান। সন্ধ্যায় অসহায়ত্ব স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস স্বামীর ন্যার্য হিস্যা পেতে শশুর বাড়িতে অবস্থান নেন। এরপরও মন গলেনি শশুর আ. কাদের ও স্বজনদের।
রাত সাড়ে ৮ টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ বাড়ির বসতঘরের আঙ্গিনায় পরে থাকতে দেখা যায়। ওই সময়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ইউসুফ গাজী সুমনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি সুরাহ্ করতে কয়েক দফা পিতা আ. কাদের পাটওয়ারীর সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে মন গলতে বা প্রবাসী মোস্তফা কামাল পাটওয়ারীর উপার্জিত অর্থ দিয়ে কেনা সম্পদ থেকে ভাগ দেওয়ার আস্বাস তারা পাননি। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আবারও সমঝোতা করার চেষ্টা করেন।
তবে আ. কাদের পাটওয়ারীর সাথে বারংবার কথা বলার চেষ্টা করার পরও সংবাদ কর্মির পরিচয়ে পেলে কোন ধরনের সাড়া সব্দ পাওয়া যায়নি।
প্রবাসীর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, স্বামীর প্রবাসে থাকাকালীন সকল অর্থ শশুর আ. কাদের এর নিকট পাঠানো হয়। সে সকল অর্থ দিয়ে এলাকায় বহু সম্পদ গড়েন। কিন্ত তিনি পিতা হয়ে ছেলের চিকিৎসা খরচের জন্য নগদ বা সম্পদ বিক্রি করেও দেননি। আমি আমার স্বামীর ন্যার্য হিস্যা পেতে এবং দুই সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য এক তিল সম্পত্তি পেতে স্বামীর মরদেহ নিয়ে অবস্থান নিয়েছি।