শিক্ষকদের বলা হয় শিক্ষা গুরু কারন তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে
হয় সকলকে। সেই শিক্ষক যদি নিজেই তার লোভ ধরে রাখতে না
পারে, তা হলে কোথায় শিখবে মানুষ ? নিজের চাহিদা মেটাতে
স্কুলের ব্যবহারিত সিলিং ফ্যান নিতে হচ্ছে নিজ বাড়িতে। এমন
ঘটানায় এলাকা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি। সহকারী
শিক্ষকদের মাঝে লজ্জার চাপ। বিষয়টি আড়াল করতে বলতে হচ্ছে
একের পর এক মিথ্যা কথা। তারা দুইজনই শিক্ষকতার পেশায়
জড়িত। তা হলে কিসের অভাবে করতে হয়েছে এই সকল কাজ, এমন
প্রশ্ন সচেতন মহলের। ঘটনাটি উপজেলার পৌর এলাকার
ভাটিয়ালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
ঘটনার সূত্রে ধরে জানাযায়, গত ঈদুল আজহার সরকারী বন্ধের
মধ্যে অফিস সহকারী সুজন কর্মকারকে দিয়ে স্কুলের পুরাতন
ভবনের দ্বিতীয় তলার দুই রুম থেকে ৫টি সিলিং ফ্যান খুলে
নিয়ে জান অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রমীলা রানী পাল।
বিষয়টি দামা চাপা দিতে অফিসসহকারী সুজন কর্মকারকে
একটি ফ্যান দেন। বাকী ৪ টি ফ্যান প্রধান শিক্ষিকা নিজেই
নিয়ে যান। বন্ধ শেষে স্কুল খোলার পর স্কুলে শিক্ষকগন এসে দেখে
ব্যবহারীত পানির মোটর কে বা কাহারা নিয়ে যায়। এই সময়
সহকারী শিক্ষিকাগন পুরাতন ভবনের ভিতরে গিয়ে দেখে তাদের
আর কি কি জিনিস চুরি হয়েছে। রুমে গিয়ে দেখে ভবনের
দুই রুমের ৫ টি ফ্যান নেই। বিষয়টি নিয়ে অফিস সহকারী
সুজন কর্মকারকে চাপ প্রয়োগ করলে, বের হয়ে আসে আসল
তথ্য। এই সময় সুজন তার নিজ মুখে শিকার করে বলেন,
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকার কথায় তিনি স্কুল বন্ধ থাকা
কালিন সময় ফ্যান গুলো খুলে দেয়। তখন সেই ৫টি ফ্যান থেকে
একটি ফ্যান প্রধান শিক্ষিকা সুজনকে দেন। বিষয়টি সহকারী
শিক্ষিকাগন বিদ্যালয়ে সভাপতিকে অবহিত করেন। সভাপতি
বিষয়টি নিয়ে দ্রæত মিটিং কল করেন। মিটিংএ সকলে
শিদ্ধান্ত মতে ফ্যান গুলো ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করা
হয়। পরে প্রধান শিক্ষিকা ৩টি ফ্যান নিয়ে আসেন। পরের দিন
অফিস সহকারী নেওয়া সেই ফ্যানটি নিয়ে আসেন। সভায়
বাকী ফ্যান ও পানির মোটর ফিরিয়ে আনার জন্য শিদ্ধান্ত গ্রহীত
হয়।
অফিস সহকারী সুজন কর্মকার বলেন, প্রধান শিক্ষিকার
নির্দেশে আমি ফ্যান খুলো দিয়েছি। তার মধ্যে থেকে আমাকে
একটি ফ্যান দিয়েছে। যা আমি ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
সহকারী শিক্ষিকারা বলেন, ঈদের ছুটি স্কুলে এসে দেখি পানির
মোটর নেই। পানির মোটরের তথ্য খুঁজতে গিয়ে স্কুলের পুরাতন
ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাসে গিয়ে দেখি দুইটি রুমের ৫টি
ফ্যান নেই। পরে অনেক খুঁজা খুঁজি করেও স্কুলে কোথায় পাওয়া
যায়নি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষিকা বলার পরেও তিনি যানেনা বলে
যানান। আমরা অফিস সহকারীকে চাপ প্রয়োগ করলে এক
পর্যায়ে সে শিকার করে বলেন, স্কুল বন্ধ থাকা কালিন সময়
প্রধান শিক্ষিকা তাকে দিয়ে ফ্যান গুলো খুলে নেন। এবং তাকেও
একটি ফ্যান দেন।
প্রধান শিক্ষিকা প্রমীলা রানী পাল বলেন, স্কুল বন্ধ থাকা কালিন
আমি ফ্যান গুলো খুলে স্কুলে রেখেছি। বিষয়টি সভাপতির
মাধ্যেমে সমাধান হয়েছে। পরে এই বিষয়টি নিয়ে নিউজ না
করার জন্য অনুরোধ করেন।
বিদ্যালয়ে সভাপতি রেজাউল করিম রাজ্জাক বলেন, বিদ্যালয়ে বিষয়ে
আমাকে সহকারী শিক্ষক গন অবগত করলে আমি বিদ্যালয়ে গিয়ে
দেখি ফ্যান নাই। পরে তিনি ৩টি নতুন ফ্যান কিনে দেন। আর
অফিস সহকারী একটি ফ্যান দিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম বলেন,
বিষয়টি দেখে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার আজিজুন্নাহার বলেন,
বিষয়টি আমি আপনাদের মাধ্যেমে সুনেছি। আমি শিক্ষা
অফিসারকে বলবো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন
বলেন, আমি আজই শিক্ষা অফিসার কে বলবো তদন্ত টিম গঠন
করতে। এবং তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে।