হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান খান বাচ্চুর (Abdul Mannan Khan Bachu) ব্যক্তিগত facebook থেকে নেওয়া,
তা হুবহু তুলে ধরলাম
……………………………………………………………..
হরতাল ডাক দিয়েছে বি.এন.পি কিন্তু হাজীগঞ্জ বাজার ও হাজীগঞ্জের রাজপথ দখল করে আছে আওয়ামী লীগ। হরতালে হাজীগঞ্জ বাজারে বিএনপির নাম-গন্ধও নেই। বি.এন.পির জন্মের ৪৫ বছরের ইতিহাসে এরকম ঘটনা আর ঘটেনি। এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখব?
বি.এন.পির জন্মের ১৯৭৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এই দীর্ঘ ৩০ বছর, আমি এবং মরহুম আব্দুল মতিন এমপি সাহেব একসাথে হাজীগঞ্জ বাজারে বি.এন.পির নেতৃত্ব দিয়ে এসেছি। হাজীগঞ্জ বাজার আওয়ামী লীগ-বিএনপি এই দুই দলের কোনো দলের-ই দখলে ছিল না। দুই দলের কোন দল-ই এককভাবে হাজীগঞ্জ বাজারে আধিপত্য সৃষ্টি করতে পারেনি। যখন বাজারে দুই দলের কোনো গন্ডগোল লাগতো, তখন পূর্ব বাজার থেকে বণিক পটি পর্যন্ত বি.এন.পির দখলে থাকতো আর পশ্চিম বাজার থেকে বনিক পট্টি পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে থাকতো।
অনেক গন্ডগোলের সময় হাজীগঞ্জ বাজারে টিয়ার গ্যাস ও গুলিবর্ষণ হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে আমার সান্ত্বনা সিনেমা হলে আওয়ামী লীগ পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল এবং লুট করে হলের সমস্ত মালপত্র নিয়ে গিয়েছিল। তখন সেই সময়ে এই হল পুনরায় সংস্করণ করতে আমার দশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল যা বর্তমান টাকার মানে প্রায় এক কোটি টাকা। তবুও আমরা হাজীগন্জ বাজার থেকে আমাদের অবস্থান ছেড়ে যাইনি।
এরশাদের নয় বছরের আমলে মরহুম মতিন সাহেব সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তখন আমি এই নয় বছর হাজীগঞ্জ বাজারে বি.এন.পি থেকে একা নেতৃত্ব দিয়েছি। তখন ছাত্রদল,যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল ছাড়া আর কোন দল আমার সাথে ছিল না। এরশাদের সেই ৯ বছরের আমলে আমার নাম হয়েছিল “বিএনপির বাচ্চু”।
আওয়ামী লীগ থেকে মরহুম আব্দুর রব এমপি, মরহুম আলী আহমেদ মিয়াসহ প্রায় বড় বড় ১০ জন নেতা ছিলেন আর জাতীয় পার্টি থেকে ছিলেন মরহুম আব্দুল সাত্তার এমপি, মরহুম তাফাজ্জল হায়দার নসু চৌধুরীসহ আরো অনেকেই। বি.এন.পির নেতা হিসেবে একমাত্র আমি-ই তাদের সাথে হাজীগঞ্জ বাজারে টেক্কা দিয়ে রাজনীতি করেছি। শুধুমাত্র আত্মগোপন ছাড়া এক মিনিটের জন্যও হাজীগঞ্জ বাজার আমি ত্যাগ করিনি।
কিন্তু আজ অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়,বি.এন.পির অতীতের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ম্লান করে দিয়ে আজ হাজীগঞ্জের বি.এন.পি চলে গেছে হাজীগঞ্জ বাজার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সুদূর এক নিবৃত গ্রামে।
ভবিষ্যতই বলতে পারবে, আগামীতে যে কঠোর আন্দোলন আসতে চলেছে, সেই কঠোর আন্দোলনের সময় হাজীগঞ্জের উপজেলা বি.এন.পি হাজীগঞ্জ বাজারে এসে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না এবং টিকে থাকতে পারবে কি না?
আমি উমরাহ হজ্ব পালন করতে গিয়ে মক্কায় এক্সিড্যান্ট করেছিলাম এবং সেখানের হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। বর্তমানে ঢাকার নিজ বাসায় অসুস্থ অবস্থায় থেকে তাড়াহুড়ো করে মনে অনেক দুঃখ নিয়ে এই লেখাটি লিখেছি।