চাঁদপুরের কচুয়ায় ভূয়া জন্মসনদ দিয়ে বিবাহ পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। কচুয়া উপজেলাধীন ৩নং বিতারা ইউনিয়নের কাজী শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে উঠেছে এ অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসী জানান ,শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১১টায় কাজী শফিকুর রহমান শাসনপাড়া গ্রামের তার নিজ বাড়িতে ৫ নং সহদেবপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কাদিরখিল গ্রামের তৌহিদ মুন্সির মেয়ে তানজিল তাহসান (১৭) বছর এর সাথে পালাখাল গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর (১৭) এর বিয়ে সম্পাদন করে।
স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোক জানান , কাজী শফিকুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন ভুয়া জন্মসনদ , তালাক সনদ তৈরি করে প্রতিনিয়ত বিবাহ ও তালাক সম্পাদন করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিটি সনদ বাবদ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ জালিয়ত চক্র। পূর্বেও আব্দুল্লাহ আল মামুন কে মতলব (দ:) ইউনিয়নের আশ্বিনপুর গ্রামে এমন ঘটনায় আটক করা হয়েছে,স্থানীয়ভাবে সালিস বিচার করে সাবধান করার পরও সে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি বন্ধ করেনি।
ভুয়া ও জাল জন্ম সনদ দিয়ে বাল্যবিবাহ কিভাবে পড়িয়েছেন- এমন প্রশ্নের জাবাবে কাজী শফিকুর রহমান বলেন, আমার কাছে ডকুমেন্ট আছে, আমি ডকুমেন্ট উপস্থাপন করবো।
ভুক্তভোগী তানজিলা তাহসানের বাবা তৌহিদ মুন্সি ও তার পরিবারের সদস্য মনির হোসেন জানান, তাঁদেরকে চাপ প্রয়োগ করে কাজী শফিকুর রহমান ও এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন তানজিলা তাহসানকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করায় ।। তবে ভূয়া সনদ দিয়ে বাল্যবিবাহ পড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী শফিকুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে যাই বলুক আমি এ বিবাহ ডকুমেন্ট অনুযায়ী পড়িয়েছি। আমি ডকুমেন্ট উপস্থাপন করবো।
উল্লেখ্য যে, কচুয়া উপজেলাধীন ৩ নং বিতারা ইউনিয়নের কাজী শফিকুর রহমান (বর্তমান) দীর্ঘ ২০ বছর আগে অত্র ইউনিয়নের মূল কাজী আবুল খায়ের এর কাছ থেকে প্রতারণা করে দায়িত্ব ছিনিয়ে নিয়েছেন। দায়িত্ব ছিনিয়ে নিয়ে সে নিজে দায়িত্ব পালন না করে ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন কে দিয়ে কাজীর দায়িত্ব পালন করছেন।কাজীর দায়িত্ব ছিনিয়ে নিয়ে সে নিজে দায়িত্ব পালন না করে মোটা অংকের বিনিময়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বিশাল অর্থের মালিক হয়েছেন। তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন, আওয়ামী সরকারের আমলে নেতা কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কয়েকশত অবৈধভাবে বিবাহ, তালাক নামা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনিয়ম করে ঢাকায় প্লাট বাড়ির মালিক হয়েছেন।
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদাহ ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান বলেন, আমার সাইন জাল করে একটি চক্র চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি দিয়ে চাঁদপুরের কচুয়ায় জন্মসনদ তৈরি করে বাল্য বিবাহ দিয়েছে। যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী’র মুঠোফোনে বার বার কল দেয়া স্বত্ত্বেও উনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র সিএ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইউএনও স্যার ব্যাস্ত থাকার কারণে ফোন রিসিভ করে নি। তবে বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ ই-মেইলে পেয়েছি।