জসিম উদ্দিন:
কোরবানি একটি পবিত্র ইবাদত ।ত্যাগের মহিমায় উত্তীর্ণ হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগন যেন হালাল রুজি থেকে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানি সম্পূর্ণ করেন। এটা অনেক পুরনো প্রথা পাক ইসলামিক যুগ থেকেই চলে আসছে। আসলেই ধর্মীয় এই আচরণটা আজকাল আমাদের সমাজের কিছু ব্যক্তি নানা পতায় রূপ দিয়ে সমাজকে অস্থির করে তুলেছে।
ঈদুল আযহা আসলেই আরেকটা প্রথা দেখা যায়। কুরবানীর দুই দিন আগে (শ্বশুরবাড়ির উপহার)একটা ছাগল এসে বাড়ির আঙ্গিনায় ম্যা ব্যা করতে থাকে। মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে ছাগল এটা পাঠাতেই হয় ।নতুবা মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খোটা দিয়ে থাকে।এ প্রথা গুলো বড়ই জঘন্য ।মনে হয় এসব এক ধরনের জুলুম।কারো সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও তা পূরণ করতে হয় মেয়ের সুখের জন্য।
এটা অনেকটা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সরকারি খয়রাতে হজ করার মতো। নিজেদের গর্ব করার মত কিছু নেই, তাই ছেলের বউয়ের বাপের বাড়ি হতে নেয়া উপঢৌকনই হয়ে দাঁড়ায় গর্বের বিষয়।এরা বুঝে না, ছেলের মাধ্যমে নিয়ে যে অসুস্থ রীতি চালু করেছে।
নিরুপায় মেয়ের পরিবার বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এ অসামাজিক ও অমানবিক প্রথার শিকার হয়। কোরবান আসলেই আতঙ্কে পড়েন কিছু কিছু পরিবার ।বিশেষ করে সদ্য বিয়ে দেওয়া কন্যার পরিবারই এই আতঙ্কে ভুগেন।
এই জোরজবরদস্তির উপহার মেয়ের পরিবারের উপর একটা ভয়াবহ চাপ ছাড়া কিছুই না। আমাদের সমাজের মানুষের উচিত এই কুপ্রথা এই মুহূর্ত হতে বর্জন করা এবং এই অসুস্থ কালচারকে চিরতরে দাফন করে ফেলা।
ঈদ আসে ঈদ যায় পরিবর্তন আসে না আমাদের সমাজ দিন দিন কমে যাচ্ছে ভ্রাতৃত্ব ও মমত্তবোধ হারাতে বসেছি ঐতিহ্য। সমাজটা আজকাল ঐতিহ হারাতে বসেছে। কেবল কিছু অপসংস্কৃতির কবলে পড়ে। ঘুনে ধরা এই সমাজকে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।
লজ্জা উঠে গেছে সমাজ থেকে আত্ম সম্মান চলে গেছে আমাদের মনুষ্যত্বে, দিন দিন ব্যক্তিত্ব হারিয়ে সমাজে কু প্রথাগুলো ঘেড়ে বসেছে। সমাজের শিরায় শিরায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিষফোড়ার মতো রূপ নিয়েছে কিছু কিছু কৃত্রিম সৃষ্টি প্রথা সমূহ।
আমাদের সম্মানিত উচ্চবিত্ত পরিবার আপনারা এসবের পিছনে অনেকটাই দায়ী। কারণ আপনাদের সামর্থ্য আছে তাই সমাজে জন্ম নিল যৌতুক প্রথা , কোরবানির ছাগল দেওয়া প্রথা ,ঈদে সবার জন্য কাপড় পাঠানো প্রথাগুলো।
আপনারা (উচ্চবিত্ত) পরিবার গন শুরু করেছেন বিলাসিতার। কিন্তু সমাজে সেটা প্রথা হয়ে গেছে। আর এ প্রথা গুলো অভিশাপে রূপ নিয়েছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে। এজন্য আপনাদের দায়ী করি। আসুন আমরা সবাই মিলে উদার হই, মহান হই ,সমাজকে কলঙ্কমুক্ত করি।