স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধর্ষন করার অভিযোগে হাজীগঞ্জ বাজারের কোহিনূর আবাসিক হোটেল মালিক আরিফ হোসেন (৩৩) সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা করেছেন এক নারী।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারী) ভুক্তভোগী নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে চাঁদপুর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানালে ধর্ষণ, ব্লাকমেল ও পর্ণগ্রাফি আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। যার মামলা নং ২১/২৩ইং। বিজ্ঞ বিচারক বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন।
অভিযুক্ত আরিফ হোসেন (৩৩) হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের খন্দকার বাড়ির মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে। এছাড়াও মামলায় ২নং অভিযুক্ত করা হয়েছে মোঃ শরিফ হোসেন (৩৮), ৩ নং অভিযুক্ত মোঃ মাইনুদ্দিন(২২) করা হয়েছে, ৪নং অভিযুক্ত করা হয়েছে মোছাম্মদ আইরিন আক্তার(৩৮) কে।
মামলার অভিযোগপত্রটি হুবাহু তুলে ধরা হলোঃ- বাদীনিপক্ষে বিনীত নিবেদন এই যে, বাদীনি অত্যন্ত সহজ-সরল, শান্তিপ্রিয়, অসহায়, আইন মান্যকারী মহিলা হয়। পক্ষান্তরে ১নং আসামী দুষ্ট, দুর্দান্ত, অন্যায় অত্যাচারী, অসামাজিক প্রকৃতির, দুঃশ্চরিত্র, ধর্ষণকারী প্রকৃতির লোক হয়। আসামীর দেশীয় আইন কানুনের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ নাই। বাদীনি হাজীগঞ্জ বাজারে ডিগ্রি কলেজ রোডে ভাড়া বাসায় বসবাস করিত। বসবাস করার সুবাদে ১নং আসামীর অসৎ উদ্দেশ্যে বাদীনির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ১নং আসামীর সহিত বাদীনির 01717-0064** 019133-059**
উক্ত মোবাইলে পরিচয় ও কথাবার্তা হয়। ১নং আসামী বাদীনির সহিত পরিচয়ের সূত্র ধরিয়া বিভিন্ন সময় বাদীনির ভাড়া বাসায় আসা-যাওয়া করিত। একপর্যায়ে ১নং আসামীর সহিত বাদীনির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে ১নং আসামী বাদীনিকে বিবাহ করার আশ্বাস প্রদান করিলে ঘটনার দিন, তারিখ, সময় বাদীনিকে বিবাহের কথা বলিয়া একে আরেক বুঝাইয়া ঘটনার স্থানে আনে। পরবর্তীতে ১নং আসামীর বাদীনিকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দিয়া প্রতারনামূলকভাবে বাদীনিকে ধর্ষণ করে। যাহা ১নং . আসামী সু-কৌশলে স্থিরচিত্র ধারণ করিয়া রাখে। T১নং আসামী বাদীনিকে ইস্যুতে ঘটনার সময় তোলা স্থিরচিত্রগুলো পাঠিয়ে এই মর্মে হুমকি ধমকি দিয়া বলে যে, উক্ত ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানাইলে ধর্ষণের স্থিরচিত্র ফেইসবুকে ছাড়িয়া দিবে এবং বাদীনির পরিবারের লোকজনের কাছে পাঠাইয়া দিবে। আসামী উক্ত ধর্ষণের স্থিরচিত্রের ভয় দেখাইয়া বাদীনির ইচ্ছার বিরুদ্ধে পর পর আরো কয়েকবার ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে বাদীনি ১নং আসামীকে বিবাহের চাপ প্রয়োগ করিলে ১নং আসামী বাদীনিকে বিবাহ করিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে বাদীনি ২-৪নং আসামীগণকে ১নং আসামীর এহেন ঘটনার বিষয়ে জানাইলে তাহারা: ১নং আসামীর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করিয়া উল্টো এই বিষয়ে কাউকে অবহিত করিলে বাদীনিকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি প্রদান করে।
১নং আসামী উক্ত ধর্ষণের ছবি মানুষকে দেখানোর হুমকি দিয়ে বলে যে, বাদীনি যেন উক্ত বিষয়ে কাউকে না জানায়। ইহাতে বাদীনির মান সম্মানসহ ইজ্জতের হানি ঘটিয়েছে। বাদীনি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও আত্মসম্মানবোধের হানি ঘটিয়েছে। বাদীনি স্থানীয়ভাবে ন্যায় বিচার না পাওয়ায় নিরুপায় হইয়া উক্ত ঘটনার বিষয়ে গত ১২/০১/২০১৩ইং তারিখে অফিসার ইনচার্জ, হাজীগঞ্জ থানার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বাদীনির অভিযোগ গ্রহণ না করিয়া মাননীয় আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিলে বাদীনি বিগত ১৩/০১/২০২৩ইং তারিখে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সা কার্য সম্পন্ন করিয়া হুজুরাদালতে আসিয়া অত্র অভিযোগ দায়ের করিতে বাধ্য হইলেক।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় , নারীলোভী আরিফ আবাসিক হোটেল দিয়ে পতিতাবৃত্তি, মাদকও জুয়ার ব্যবসা পরিচালনা করেন। এছাড়াও, মাদক নিয়ে পুলিশের হাতে আটকও হয়েছে কয়েকবার।
উল্লেখ্য যে, ইতোমধ্যে ধর্ষক আরিফ আরেক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে রামগঞ্জ উপজেলার খলিফাদর্জা দেখা করতে স্থানীয় লোকদের হাতে ধরা পড়ে। পরে স্থানীয়রা রামগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয় এবং মুছলেখা দিয়ে ছাড়া পান। এছাড়া সে হোটেলের মধ্য জেলার বিভিন্ন স্থান নারী এনে আবাসিক হোটেলে পতিতাবৃত্তি এবং জুয়া ও মাদকের আসর বসান। এ জন্য থানা পুলিশ তাকে বেশ কয়েকবার আটক করে।