এককালের প্রমত্তা বর্তমানে প্রায় মরা ডাকাতিয়া নদী ও চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধের অভ্যন্তরস্থ খাল দখলের ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম এবং উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন, রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন তাঁরা। সিআইপি বাঁধ, ডাকাতিয়া নদী ও খাল খনন বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন দুলালের নেতৃত্বে কমিটির লোকজন এবং স্থানীয় লোকজন তাদের নদী ও খালের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরেন।
সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় লোকজন জানান, একসময়ের প্রমত্তা ডাকাতিয়া নদী ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে খালে পরিণত হয়েছে। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধ নির্মাণের পরবর্তী সময়ে সিআইপির অভ্যন্তরে বোরোপিটসহ সকল খাল খনন না করায় এবং দখল ও দূষণে কৃষি, মাছ ও পরিবেশ ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়ে। গত এক দশক ধরে প্রতিবছর বর্ষায় জলাদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এবছর স্মরণকালের টানা বর্ষণে পুরো ফরিদগঞ্জ উপজেলাসহ সিআইপির অভ্যন্তরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে মৌসুম ভেদে পানিস্বল্পতা ও পানি বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা তাদের চাষকাজে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। ডাকাতিয়া নদীতে কচুরিপানা জটে পানি নষ্ট হয়ে মাছ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। এসব থেকে রক্ষা পেতে হলে এবং কৃষক, মৎস্যজীবী, জেলেদের জীবিকা রক্ষায় সিআইপির অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, ডাকাতিয়া নদী ও সিআইপির অভ্যন্তরে বোরোপিটসহ সকল খাল খনন, কচুরিপানা মুক্ত করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিআইপি বাঁধ, ডাকাতিয়া নদী ও খাল খনন বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন দুলাল বলেন, আমাদের পাঁচ দফা সত্যতা দেখাতে জেলা প্রশাসককে সরেজমিন পরিদর্শনের কথা বলেছিলাম। তিনি দেখতে এসে বাস্তবতা দেখে গেছেন।
জেলা প্রশাসক ও পাউবোর নিবার্হী প্রকৌশলী পরিদর্শনকালে সিআইপির অভ্যন্তরের দুরাবস্থার চিত্র অনুধাবন করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা পুরো বিষয় সর্ম্পকে জানি। আমরা এর সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। আশা করছি এই বিষয়ে সব পক্ষের সাথে কথা বলে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সিআইপি রক্ষা করা সম্ভব হবে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, সরেজমিন পরিদর্শনকালে ডাকাতিয়া নদীর অস্তিত্ব খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে নদীর পরিবর্তে অন্য জলাশয়কেই নদী বলে মনে হয়েছে। খালগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। সকল পর্যায়ের লোকজনের সাথে কথা বলে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমি ইতিমধ্যেই ইউএনওকে সেচ প্রকল্পভুক্ত সকল পক্ষকে নিয়ে একটি সভা করে সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য বলেছি।#