নিজ ঘর থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে বের করে দিয়েছে তার আপন ভাসুর, জাল, ভাসুরের ছেলে। এখন শিশু সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ওই গৃহবধূ। মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের তাতুয়া গ্রামে গত ৮ জানুয়ারী এ ঘটনার পর প্রবাসীর স্ত্রী নিলিমা আক্তার বাদী হয়ে ভাসুর আবুল কালাম মিয়াজী, তার ছেলে শেখ ফরহাদ ও আবুল কালামের স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে বিবাদী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
বাদীনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার স্বামী একজন প্রবাসী। আমার স্বামীর বাড়িতে আমার স্বামী কাউছার মিয়া ও তার বড় ভাই আমার ভাসুর আবুল কালামের যৌথ মালিকানাধীন ০৪ রুম বিশিষ্ট একটি বসত বিল্ডিং আছে। ওই বিল্ডিংয়ে আমি দুইটি রুমে বসবাস করে আসছি। আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় বিবাদীরা আমাকে উক্ত বসত বিল্ডিং থেকে বাহির করে দিয়ে বিবাদীরা এককভাবে ভোগদখল করার অপচেষ্টায় করে আমার ও আমার সন্তানদের উপর বিভিন্নভাবে অন্যায় অত্যাচার চালিয়ে আসছে। বিবাদীরা পূর্বে একাধিকবার আমার বড় সন্তান মোঃ সাহিম (০৯), কে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করিয়াছে। আমি গত ৬/৭ মাস ধরে আমি অত্র থানাধীন মুন্সিরকান্দি এলাকায় আমার পিত্রালয়ে বসবাস করে আসতেছি। আমি আমার পিত্রালয়ে যাওয়ার সময় আমার ব্যবহৃত ২ রুমে তালা বন্ধ করে যাই। গত ৭/৮ দিন ধরে বিবাদীরা আমার ব্যবহৃত ২ টি রুমের তালা ভেঙ্গে সমস্ত মালামাল অন্যত্র সরাইয়া রুম দখল করার লক্ষে রুম সংস্কারের কাজ করে। সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি বিবাদীরা আমার রুমের তালা ভেঙ্গে (০৬ ভরি স্বর্ণ অলংকার যাহার মূল্য ৬,৫০,০০০/- টাকা সহ ০৬ টি নতুন বিদেশী কম্বল, আসবাবপত্র, জরুরী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইত্যাদি) সমস্ত মালামাল নিয়ে যায়।
আমি মালামালের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলে বিবাদীরা আমার সাথে বেপরোয়া আচার আচরণ করে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। বিবাহের সময় আমার স্বামী আমাকে ৪ ভরি স্বর্ণ অলংকার দেয়। উক্ত স্বর্ণ অলংকার আমি নিরাপত্তার স্বার্থে আমার আরেক ভাশুর মাসুদ মিয়াজীর নিকট আমানত রাখি। ৩নং বিবাদী গত ৬/৭ বছর পূর্বে ৩নং সাক্ষীর নিকট আমার আমানত রাখা ৪ ভরি স্বর্ণ অলংকার কৌশলে নিয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে আমি আমার স্বর্ণ অলংকার ফেরত চাইলে বিবাদীরা আমার সাথে বেপরোয়া আচার আচরণ করে এবং বিভিন্ন হুমকী দেয়। ১নং বিবাদী কুয়েতে আমার স্বামীর সহ একই জায়গায় থাকে। ১নং বিবাদী কুয়েতে একাধিকবার আমার স্বামীকে মারধর করে এবং বিভিন্ন হুমকী দেয়। এছাড়া বিবাদীরা আমার স্বামীর পৈতৃক জায়গা ভাগবাটোয়ারা না করে তাদের খেয়ালখুশি মত ভোগদখল করার ষড়যন্ত্র করিতেছে। বিবাদীদের এমন কর্মকান্ডে আমি ভীত ও আতংকিত এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতেছি। বিবাদীরা ভয়ংকর প্রকৃতির লোক। তাদের কর্তৃক ভবিষ্যতে আমার জান মালের বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা বিরাজমান।
বাদী নিলিমা আক্তার বলেন, তারা পরিকল্পিতভাবে আমাকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য সংস্কারের নামে তালা ভেঙ্গে ফেলেছে। আমার সব জিনিসপত্র লুট করেছে। এর আগও একাধিকবার আমার শিশু সন্তানদের মেরে ফেলতে চেয়েছে। আমি আমার নিরাপত্তা চাই এবং আমার ঘর বাড়িতে যাতে নিরাপদে বাস করতে পারি সেজন্য প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগ পেয়ে মতলব উত্তর থানার এসআই মোঃ ইউনুস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ওই বিল্ডিংয়ের সংস্কার কাজ স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে বিবাদীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বাদীনির ভাসুরের ছেলে শেখ ফরহাদ সাংবাদিকদের সামনেই বাদীনির সঙ্গে চরম খারাপ আচরণ করেন এবং হুমকি ধামকি দেন।