শাহরাস্তির টামটা উত্তর ইউনিয়নের বোস্তা গ্রামে আপন বড় ভাই কর্তৃক ছোট ভাইয়ের পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে একাধিকবার তুচ্ছ বাকবিতন্ডায় মারধর, ঘরবাড়ি ভাংচুর ও প্রাণনাশের হুমকীর অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছে ভুক্তভোগি ছোট ভাই।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের বোস্তা মেহের বাড়ির মৃত মোঃ ইব্রাহিম খলিলের ছোট ছেলে কামরুজ্জামান রিপন তার ফুফু আয়েশা খাতুন থেকে বসত বাড়ির কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন। এছাড়া পিতা ইব্রাহিম জীবিত থাকাকালীন রিপনকে কিছু সম্পত্তি হেবা করে দেন। ক্রয় ও হেবাকৃত সম্পত্তি গুলো আপন বড় ভাই মোঃ লিটন (৪০) ও জেঠাতো ভাই মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন জোর পূর্বক দখল করে রাখে। এ নিয়ে একাধিক বার থানায় অভিযোগ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সুরাহা করার চেষ্টা করলেও এর কোন সার উদ্ধার হয়নি। ইতোমধ্যে লিটন আপন ছোট ভাইয়ের বসত ঘরের টিন খুলে নেয়া ও বসত ঘরে ভাংচুর করার চেষ্টা করে। এছাড়া বড় ভাই লিটন স্থানীয় ইছাপুরা বাজারে নিজ দোকানের সম্মুখে ছোট ভাই রিপনের উপর অতর্কিত হামলা ও ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কামরুজ্জামান রিপন জানান, আমি সাব কবলা দলিল নং-৫৯৯১/২১ মূলে বসত বাড়িতে ০.০৩১২ একর ভূমি আমার ফুফু আয়েশা খাতুন থেকে ক্রয়মূলে মালিক। কিন্তু আমার আপন বড় ভাই মোঃ লিটন ওই সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। দখলের পর স্থানীয় ভাবে বিষয়টি নিয়ে বেশ ক’বার মিমাংসার চেষ্টা ও একাধিকবার পরিমাপ করলেও আমার বড় ভাই তা অগ্রাহ্য করে ঝগড়া বিবাদ বাধিয়ে দেয়। এ নিয়ে আমি শারিরিক, আর্থিক ও মানসিক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। তাছাড়া তিনি আমার বসত ঘরে ভাংচুর চালিয়ে ঘরের টিনের চালা খুলে নেয়।
\
এছাড়া আমি হেবার ঘোষনাপত্র দলিল নং-১৬০/২১ মূলে বসত বাড়িতে দুই দাগে বাড়ি ও গড়লায়েক পতিত ০.০২৫০ একর ভূমি (০.০১২৯ ও ০.০১২১ একর ভূমি) আমার পিতা মোঃ ইব্রাহিম খলিল থেকে হেবা সূত্রে মালিক হই। কিন্তু ওই সম্পত্তি আমার জেঠাতো ভাই রুহুল আমিন জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। আমার বড় ভাই ও জেঠাতো ভাই যোগসাজসে আমার সম্পত্তিগুলো দখলে রেখেছে। আমি এ নিয়ে বহুবার স্থানীয় ও আইনি পদক্ষেপ নিয়েও কোন সুরাহা পাইনি। আমার ৩ কণ্যা সন্তান রয়েছে। কোন পুত্র সন্তান না থাকায় তারা আমার উপর অমানবিক আচরণ করছে। আমার বিয়ের উপযুক্ত মেয়েদের নিয়ে আমি বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি তাদের এমন কর্মের সুষ্ঠু বিচার ও সম্পত্তিগুলো সঠিক ভাবে ফিরে পেতে আইন প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
অভিযুক্ত বড় ভাই মোঃ লিটন জানান, আমার ছোট ভাই অবান্তর অভিযোগ করছে। মূলত আমার বাবার সম্পত্তি কম। আমরা ৪ ভাই, কোন রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই। তারপরও আমি তাকে পুরনো ঘর, যাতে আমার নিজস্ব অর্থ রয়েছে সেটা তাকে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করেছি। রিপন তা না মেনে বার বার এলাকার মানুষদের ডেকে নিয়ে হয়রানি ও বিরক্ত করছে। আমি বসত ঘরের আমার টাকার টিন আমি খুলে এনেছি। তার কোন কিছু আমি হাত দেইনি এমনকি তাকে মারধরও করিনি। তার সম্পত্তি দখলের অভিযোগও ভিত্তিহীন।
অভিযুক্ত অপর ব্যক্তি রুহুল আমিন জানান, রিপনের কোন সম্পত্তি আমি দখল করিনি বরং তাদের পুরো পরিবারের নিকট আমার বাবা সম্পত্তি পাওনা রয়েছে। তাদের ভাইদের মধ্যে কোন মারধর বা ঘরবাড়ি ভাংচুরের বিষয়ে আমি দেখিনি তবে লোকমুখে শুনেছি। সত্য মিথ্যা আল্লাহ ভালো জানেন।
ওই বাড়ির বাসিন্দা হুমায়ন জানান, রিপন ৩ মেয়েকে নিয়ে বিপাকে রয়েছে। তার বড় ভাই লিটন ঘরবাড়ি ভাংচুর করে টিন খুলে নিয়ে যায়। তাছাড়া ইছাপুরা বাজারে লিটন তার দোকানের সামনে রিপনকে ছুরি নিক্ষেপ করে। ওই ছুরি রিপনের গায়ে না পড়ে আমার হাতে পড়ায় কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, আমরা তাদের সম্পত্তিগত বিরোধ নিরোসনে বহুবার বৈঠক করেছি। কিন্তু লিটন সবসময় বৈঠক অমান্য করেছে। তার ছোট ভাই রিপন অনেক ক্ষতিগ্রস্থ। সে সমাজ ও এলাকার লোকদের সম্মানে কখনো বৈঠক অমান্য করেনি কিন্তু তার বড় ভাই কাউকে তোয়াক্কা করে না। সবসময় সুন্দর একটা সমাধানের চেষ্টাকালে সে বাঞ্ছাল করে দেয় পুরো আয়োজন। তাদের বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান হওয়া জরুরী।