চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় অতিরিক্ত দ্বায়িত্বরত হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএডিসি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশনা অমান্য ও তা বাস্তবায়নে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে খিলা খাল ভাসমান সেচ প্রকল্পের সাবেক সেচ ম্যানেজার মো. জহিরুল ইসলাম মাসুদ এ অভিযোগ করেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বিগত ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে তিনি এ প্রকল্পের কেন্দ্রীয় ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলা সেচ কমিটির পক্ষ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সাইফুল ইসলাম দিদারকে সেচ ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। সেখানে তিনিসহ ৭ জন আবেদন করলেও শাখা ম্যানেজারদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে এ দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে শাখা ম্যানেজাররা বিগত সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও পরবর্তীতে প্রেস কনফারেন্সে প্রতিবাদ করলেও সংশ্লিষ্ট দফতর তাতে সাড়া দেননি।
এ ঘটনায় তিনি গত ১৭ ডিসেম্বর/২৪ মহামান্য হাইকোর্টে সাইফুল ইসলাম দিদারকে দেয়া সেচ ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব বাতিলের জন্য একটি রিট পিটিশন করেন। গত ২৭ জানুয়ারি আদালত সাইফুল ইসলাম দিদারের সেচ ম্যানেজারের দ্বায়িত্বকে অবৈধ বলে নির্দেশ দেন। এরপর তাকে দ্বায়িত্ব থেকে অপসারণ করে ৩ মাসের জন্য জেলা বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) এ প্রকল্পের দায়িত্ব গ্রহনের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী মোঃ খলিলুর রহমানকে অবগত করেন। জেলা কর্মকর্তা ২/৩ দিনের মধ্যে বিএডিসি দ্বায়িত্ব বুঝে নিবে বলে জানান। ১মাস অতিবাহিত হলেও বিএডিসি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধ ভাবে সাইফুল ইসলাম দিদারকে দিয়ে সেচ ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব পালন করাচ্ছেন। পন্টুন ড্রাইভার মিজান দিদারের হয়ে শাখা ম্যানেজারদের কাছ থেকে জোর পূর্বক অর্থ আদায় করছেন।
এ বিষয়ে বিএডিসি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে আলাপে তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনার পর থেকে সাইফুল ইসলাম দিদার এ প্রকল্পের ম্যানেজার নয়। যদি কেউ টাকা উত্তোলন করে থাকে সেটা বিধি বহির্ভূত। এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক কেন্দ্রীয় ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম মাসুদের বিরুদ্ধে বিগত সময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আদালতে এ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা থাকায় সে সময় তাকে সেচ ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব দেয়া হয় নি।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর খিলাখাল ভাসমান সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদপুরের শাহরাস্তি, কচুয়া, কুমিল্লার বরুড়া, লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ৫ শ’ হেক্টর কৃষিজমিতে সেচের পানি সরবরাহ করা হয়। প্রকল্পটি নিয়ে টানাটানিতে এ অঞ্চলের ৫০ হাজার কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।