মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্:
হাজীগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস ২০২৩ইং উদযাপন করা হয়েছে। রোববার (২৬ মার্চ) সুর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি-বেসরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও উপজেলা পরিষদের বিজয়স্তম্ভ এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়।
এরপর উপজেলা চত্ত্বরে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ এ পুস্পস্তবক অর্পন করে সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের পক্ষে এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষে চেয়ারম্যান গাজী মাইনুদ্দিন ও প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের নেতৃতে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ব্যক্তি বিশেষ পুস্পার্ঘ্য অর্পন করেন।
এদিন সকাল ৮টায় হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মাইনুদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম ও অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বাংলাদেশ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি, বয়েজ স্কাউট, রোভার স্কাউট, গালর্স গাইড ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন।
এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে প্রদর্শন, বালক-বালিকাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় নাসিরকোট শহীদ স্মৃতি সমাধিস্থলে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরমুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের সংবর্ধণা প্রদান ও সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়াও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হাসপাতাল ও এতিমখানায় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। উপজেলা চত্ত্বরে শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন করা এবং জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সকল মসজিদ, মন্দির বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মাঝে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের ল্েয স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এই দিন উপলে সারা দেশে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারিভাবে এবং দলীয় ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি রেখেছে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও স্মরণে দিনটি পালিত হয়।
১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মাতৃভূমিকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন। তিনি শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান।
এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যা, ধ্বংস ও পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে ৯ মাসের মরণপণ লড়াইয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। গোটা জাতি আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের। শ্রদ্ধা জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাংলার অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।