হাজীগঞ্জে জোড়া খুনের ঘটনায় আসামি মো. সোহাগ (২৫) কে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল তাকে আটক করে হাজীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব-১০ এর অনলাইন মিডিয়া সেল থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আটক মো. সোহাগ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলী গ্রামের মুন্সী বাড়ির বিল্লাল হোসেনের ছেলে। এর আগে গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দণি বড়কুল গ্রামের পান্নার বাড়ি পাশে (কালা সিতার বাড়ি) দুলাল সাহার বসতঘরের শোবার ঘর থেকে উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান (৭০) ও কাজলী রানি বর্মনের (৫৫) হাত-পা বাধা ও চোখ-মুখ বাধা মরদেহ উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।
ধারণা করা হচ্ছে, ৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনায় দুর্বত্তরা। এই ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার দম্পতির বড় মেয়ে রিনা রানি বর্মণ (৪০) বাদি হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা (নং- ১০) দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে থানা পুলিশ এ পর্যন্ত ৯ জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
র্যাবের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশের কারণে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এমন ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব উক্ত চাঞ্চল্যকর ও কু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার ল্েয গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সোহাগকে আটক করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা সত্যতা স্বীকার করে মো. সোহাগ র্যাবকে জানায়, সে একটি চোর চক্রের সদস্য। গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে চুরির উদেশ্যে জানালা ভেঙ্গে তারা দুলাল সাহার ঘরে প্রবেশ করে। এসময় উত্তম চন্দ্র বর্মন তুফান ও কাজলী রানি বর্মণ ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং তাদেরকে চিনে ফেলে।
এ সময় ডাক-চিৎকারের চেষ্টা করলে আটককৃত আসামি মো. সোহাগ ও তার সহযোগীরা মিলে উত্তম চন্দ্র বর্মন তুফান ও কাজলী রানি বর্মনের হাত-পা, চোখ বেঁধে বিছানার উপর বালিশ চাঁপা দিয়ে তাদেরকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পরে ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে র্যাব-১০ এর মিডিয়া সেল’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) মো. আমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর ও কু-লেস হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পেরে আমরা ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত মো. সোহাগের অবস্থান নিশ্চিত করি।
তিনি জানান, পরবর্তীতে এসপি মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেলের নেতৃত্বে আমাদের একটি আভিযানিক দল বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানী ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. সোহাগকে আটক করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে বলা যাবেনা। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ১০ জন পর্যন্ত জড়িত বলে আমরা জানতে পেরেছি।