সারা দেশে চলছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে
হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেক মানুষ। এরমধ্যে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে
সরকারি-বেসরকারিভাবে চালানো হচ্ছে সচেতনতামূলক প্রচারণা। এমন পরিস্থিতিতে মতলব
উত্তরের ছেংগারচর বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার
কারণে বেড়েছে মশার উপদ্রব। দিনের আলোতেও মশার কয়েল কিংবা স্প্রে ব্যবহারেও কোনোভাবেই
রেহাই মিলছে না। এজন্য সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছেংগারচর পৌরর বাজারের মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের পাশে ও ছেংগারচর
পৌর ভূমি অফিসের সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এগুলোর মধ্যে
রয়েছে ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা রকম পলিথিনের ব্যাগ। সেখানে অল্প বৃষ্টিতে
পানি জমছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা ও ডাবের খোলে জমা পানিতে ময়লার
পানি জমে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, অন্যদিকে প্রজনন হচ্ছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন
জীবাণুবাহী মশার। এতে পার্শ্ববর্তী বাসা-বাড়ির বাসিন্দাদের ডেঙ্গুসহ নানা রোগে
আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ছেংগারচর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো. আরিফ উল্যাহ সরকার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরপরই মশা
নিধনের জন্য বিভিন্ন স্থানে স্প্রে করা হয়েছে। খাল পরিস্কার করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মমিনুল ইসলাম বলেন, ছেংগারচর বাজারের পাশের খালে ময়লা আবর্জনা ফেলে খালের পানি
নিষ্কাশন প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে।
বাসিন্দারা জানান, সারা দেশে ডেঙ্গুর যে প্রকোপ দেখা দিয়েছে এ অবস্থায় যত্রতত্র বর্জ্য ময়লা-
আবর্জনা ফেলা বন্ধে এখনই উদ্যোগ না নিলে ডেঙ্গু শিগগিরই ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে।
সফিকুল ইসলাম বলেন, বাসার পাশের খালি জায়গায় নিয়মিত মার্কেটের ময়লা-আবর্জনা ফেলার
কারণে বাসার ভেতরে মশার উৎপাত অনেক বেশি। দিন-রাত মশায় কামড়ায়। তার অভিযোগ, মার্কেট
কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও এসব ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নিচ্ছে না। এমনকি ময়লা ফেলাও বন্ধ
করছে না। ফলে দিন দিন বড় হচ্ছে স্তূপ। এডিস মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশও তৈরি হচ্ছে।
এজন্য বাসার সবাই আতঙ্কিত কখন এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে হয়।
তিনি বলেন, এখন তো ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। আতঙ্কে আছি। বাসা থেকে বের হলেই
দেখি যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। কেউ এগুলো পরিষ্কার করছে না। যেখানে-সেখানে
ময়লা ফেলছে। সামান্য পানি জমে জন্ম হচ্ছে এডিস মশার। বাসা থেকে বের হয়ে শিশুরা স্কুলে
যেতে ভয় পাচ্ছে। তাই যারা যত্রতত্র এগুলো ফেলছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা
জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল হাসান
বলেন, দ্রæতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল মতলব উত্তরে
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলছে। উপজেলায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন দুই
শতাধিক। সাথে নতুন যুক্ত হয়েছে ঘরে ঘরে জ্বর আর ডায়রিয়ায় রোগী। এতে করে ৩১ শয্যা
বিশিষ্ট উপজেলার সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। ডাক্তারদের মতে, বহি:বিভাগে
আগত রোগীর বেশিরভাগ জ্বর নিয়ে আসা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুর সংখ্যা
বেশি।