আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিন। তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে এবং শুভকাঙ্খিদের অনুরোধে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে সংবাদকর্মীদের জানান।
ইতিমধ্যে গাজী মাঈনুদ্দিন পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক মুরাদ। তিনি গত বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ এবং ১৯ নভেম্বর (রোববার) দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন গাজী মাঈনুদ্দিন। পরবর্তীতে তিনি মনোনয়ন ফরম জমা দেন। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম।
এদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যদি কোনো আসনে জয়ী হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে। রোববার (২৬ নভেম্বর) মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সাক্ষাৎকালে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।
দলীয় প্রধান বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ পাস করে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক প্রার্থীকেই একজন করে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখতে হবে। এর মানে হচ্ছে, দলীয় সভানেত্রী একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান। ধারণা করা হচ্ছে, এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দলীয় পদ-পদবী থাকার পরও গাজী মাঈনুদ্দিন নির্বাচনে অংশ নিবেন।
উল্লেখ্য, নেতাকর্মীদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাজী মাঈনুদ্দিন হাজীগঞ্জ উপজেলার তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেন। বৈঠকে দলের নেতাকর্মী, সমর্থক, জনপ্রতিনিধি ও তাঁর শুভাকাঙ্খিরা তাঁকে নির্বাচনে অংশ নিতে বারংবার অনুরোধ জানান।
গাজী মাঈনুদ্দিনও তাদের অনুরোধে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধীতা করবেন বলে সংবাদকর্মীদের নিশ্চিত করেন। গত ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতৃবৃন্দের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ বাস্তবায়ন অর্থ্যাৎ পৌর ও ইউনিয়নসহ ওয়ার্ডের ২৪৬ জন প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির মধ্যে নিরুঙ্কুশ প্রায় ২২০/২৫ জন নেতা দাবি জানিয়েছেন, আমি যেন আগামি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি।
ওই সংবাদ সম্মেলনে গাজী মাঈনুদ্দিন বলেন, আমার যথেষ্ট জনসমর্থন আছে এবং নেতাকর্মীরা আমার সাথে রয়েছেন। আমি আশা ও বিশ^াস করি, সকল নেতা-কর্মী আমাকে যে ভাবে সমর্থন দিয়েছেন তার সঠিক প্রতিফলন হিসাবে ৭ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনে আমি জয়লাভ করবো। এ দিকে নেতাকর্মীদের অনুরোধের পাশাপাশি, যেহেতু দল এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের সিদ্বান্ত নিয়েছে, সেহেতু তাঁর প্রার্থী হওয়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং আগামি ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।