জাদুকরি ভাষণ ্য়ঁড়ঃ;এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের
সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম্য়ঁড়ঃ; আজ সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি
জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। যুগান্তকারী
ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭১ সালে এই দিনে
তখনকার রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১৯ মিনিটের এক
জাদুকরি ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ও সংগ্রামে
উজ্জীবিত করেছেন বঙ্গবন্ধু। বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা
দিয়েছিলেন-রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো
ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম
স্বাধীনতার সংগ্রাম্য়ঁড়ঃ;।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কচুয়া উপজেলা
প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি সূচনা হয়। প্রথমে
স্থানীয় সাংসদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড.
সেলিম মাহমুদের পক্ষে ইউএনও মো. ইকবাল হাসান, ওসি মো. মিজানুর রহমান,
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ পোদ্দার ও
পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক ভৌমিক পুষ্পস্তবক অর্পণ
করেন। এসময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতৃবৃন্দকে
পুষ্পস্তবক অর্পনে দেখা যায়নি। পর্যায়ক্রমে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসানের নেতৃত্বে বিভিন্ন দপ্তরের
কর্মকর্তাবৃন্দ, উপজেলা পরিষদের পক্ষে মো. শাহজাহান শিশির, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের
পক্ষে আব্দুল মবিন, কচুয়া থানার পক্ষে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর
রহমান, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির পক্ষে ডিজিএম বেলায়েত হোসেন ও এজিএমকম-
আবু হানিফ ও কচুয়া প্রেসক্লাবের পক্ষে সভাপতি আলমগীর তালুকদার ও সাধারন
সম্পাদক সুজন পোদ্দারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা
জানানো হয়।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোন নেতৃবৃন্দকে
তাদের সংগঠনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে দেখা
যায়নি। এসময় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিত না দেখে বিরূপ প্রতিক্রিয়া
সাধারণ মানুষের মাঝে লক্ষ্য করা গেছে।
পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের মিলনয়াতনে ঐতিহাসিক ৭
মার্চ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের
আয়োজন করা হয়। ইউএনও মো.ইকবাল হাসানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা
পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল
মবিন, কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা হিন্দু
বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রাণধন দেব, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের
তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা ও
কচুয়া শহিদ স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায়ও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোন নেতৃবৃন্দদের দেখা
যায়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান
শিশিরের সাথে সাংসদ সেলিম মাহমুদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ৭
জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে কচুয়া আসনে নৌকার প্রার্থী সেলিম মাহমুদের
পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেও কেউ কারো সাথে কথা বলেননি ও দেখা
করেননি। সাংসদ নির্বাচনের পর তাদের মধ্যকার বিরোধ আরো বড় আকার ধারন করে।
সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ বর্তমান এমপি ড.
সেলিম মাহমুদের বেল্টে থাকায় সভাপতি শাহজাহান শিশিরের সাথেও দূরত্ব তৈরি
হয়।
আজকে এই ঐতিহাসিক দিনে সাংসদ ড. সেলিম মাহমুদের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর
প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোন শীর্ষ
স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে দেখা যায়নি। তার পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন ইউএনও মো.
ইকবাল হাসান ও ওসি মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ পোদ্দার ও পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক মানিক ভৌমিক।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
শ্রদ্ধা নিবেদন না করার কারন জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.
শাহজাহান শিশির জানান, আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী
লীগের সভাপতি পরিষদের পক্ষ থেকে আমি জাতি পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা
নিবেদন করেছি। একইতো। আমার সাধারণ সম্পাদক কী কারনে আসেননি তা
আমি অবগত নই।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন
চৌধুরী জানান, আমি অসুস্থ থাকার কারনে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর
প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণে যেতে পারিনি। সংগঠনের অন্যান্য
নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন
করার জন্য। যেহেতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি
শাহজাহান শিশির তার পরিষদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
করেছেন তার পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও আরেকটি ফুলের ঢালা তৈরি করে দেওয়া উচিৎ
ছিল।
উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ মাঠ পর্যায়ে শক্ত অবস্থানে থাকলেও আজকে ওই
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতার
প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভায়
যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কাউকে দেখা যায়নি।