চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজে ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির হান্নান এবং হারুন গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি এমনকি হাতা-হাতির ঘটনায় দিনভর গুপ্টি এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই সংবাদ পাঠানোর আগে (রাতে) উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্লাক বাজারে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ এডহক কমিটি জমা দিতে গেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা চত্ত্বর থেকে কে বা কারা শিক্ষকদের হাত থেকে কমিটির কাগজ নিয়ে যায়। পরক্ষণেই উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান কচি উপস্থিত হয়ে নতুন করে আবার এডহক কমিটি জমা দিতে গেলে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ৫ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করে উঠে চলে যাওয়ার সময় উপস্থিত বিএনপির দুই গ্রুফের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এতে কলেজ আঙ্গিনা এবং গল্লাক বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলে জানা যায়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিএনপির দুই গ্রুফের সমর্থক তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে এডহক কমিটির প্রধান করতে চায়। কেউ চাচ্ছেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান কচি এডহক কমিটি প্রধান হোক। অন্যরা চাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুবক্তা এবং ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিত্ব ডা. আবুল কালাম আজাদ কলেজের এডহক কমিটির প্রধান থাকুক। তবে ডা.আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, কলেজের অধ্যক্ষ নিয়ে এখনো কলেজ ব্যবস্থাপনা অস্থির। আমরা চেয়েছিলাম পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বসে আলাপ আলোচনা করে এডহক কমিটি ঘটন করবো কিন্তু ওরা (কচি) বির্তকীত শিক্ষক হারুনকে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এডহক কমিটি ঘটন করে জমা দিতে যায়। তারা কেন গোপনে এ কাজটি করতে গেলো? কতিপয় লোক কচির কথা বলে। অথচ বিগত দিনে তারা আওয়ামীলীগের সাথে লিয়াজু করে চলেছে। আগে সে ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ দ্বারা নিজের অস্তিত ধরে রেখেছে। এখন তাদের দিয়ে আমাদের লোকদের উপর হামলা করাচ্ছে।
কলেজের সহকারি শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন কুমিল্লার মধ্যে সেরা কলেজ ছিল গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজে। কিন্তু বর্তমানে কলেজের অবস্থান নিম্নমুখী। আমরা আমাদের কলেজকে আবার কুমিল্লা বোর্ডের সেরা কলেজে রূপান্তরিত করতে চাই। কিন্তু নিজেরা নিজেরা যদি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ি তাহেল যাদেরকে পরাজিত করে আপনারা এসেছেন তারা লুকিয়ে লুকিয়ে হাসবে। আমার প্রস্তাব আপনার দুই গ্রুপে বসে এডহক কমিটি ঠিক করেন। এতেই কলেজে শান্তি ফিরে আসবে।
উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান কচি বলেন- আমাদের পরিবার এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে অনেক কাজ করেছে। গতকাল (৪ সেপ্টম্বর) ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এডহক কমিটি জমা দিতে গেলে একদল লোক শিক্ষকদের হাত থেকে ফাইল নিয়ে যায়। আমি ফরিদগঞ্জ থাকায় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে বলে আসি।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি জানতে পেরেছি কথিত বিএনপি নামধারী কিছু আ’লীগের লোক কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। তাই আজ আমি কলেজের শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করতে এসেছি। আমি দলিয় কোনো লোককে সেখানে প্রবেশ করতে দেইনি কিন্তু ওদের বখাটে কিছু ছেলে আগে থেকে সেখানে বসে ছিলো। আমি শিক্ষকদের সাথে সৌহার্দপূর্ণ আলাপ সেরে আশার পথে ওরা আমার উপর তেড়ে আসার চেষ্টা করে। তারপরও আমি দলিয় লোকদের শান্ত থাকতে বলি এবং সেখান থেকে সরিয়ে দেই।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সাথে কথা বলবো।