ফরিদগঞ্জে মাটি খেকোদের ভয়ঙ্কর থাবায় উজাড় হচ্ছে কৃষি জমি। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন।কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব থামছে না। উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমি ঝুঁকিতে খাদ্য নিরাপত্তা ।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাটি খেকোরা কৃষি জমির মাটি দখলে নিয়েছে। মাটি খেকোরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে, দিনের পরিবর্তে রাতে মাটি কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। ভেকু মেশিন ও কোদালের সাহায্যে তারা কৃষি জমির মাটি কেটে আইসার, ড্রাম ট্রাক ও দানব ট্রাক্টরের সাহায্যে মাটিগুলো নিয়ে যায় বিভিন্ন ইটভাটায়। এছাড়া কৃষি মাঠের মাঝখানে বড় বড় মাছের ঘের, বসতবাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। এসব কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় উল্লেখযোগ্যহারে ধান উৎপাদনকৃত শত-শত একর কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে।
কৃষি জমির উপরের মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। টাকার লোভ এবং অসচেতনতার কারণে কৃষকরা মাটি বিক্রি করে নিজের পায়ে কুড়াল মারছেন । এ কাজে যুক্ত আছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা ।
স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষক ও জমির মালিকরা জানায়, উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটার মালিকদের পক্ষ থেকে একশ্রেণির মাটি খেকো দালালরা নিরীহ কৃষকদেরকে পলবণ দেখিয়ে বলা হচ্ছে বোরো ধান জমিতে চাষের সময় অনেক পানি লাগে। তোমার জমির উপরের কিছু মাটি বিক্রি করে দাও তাহলে পানি বেশি থাকবে খরচ কমবে।
আবার পরের বছর পাশের জমির মালিক কে বলে তোমার জমির পানি তো পাশের জমির নিচু জমিতে চলে যায় এতে তোমার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তোমার জমি থেকে কিছু মাটি বিক্রি করে দাও তাহলে তোমার জমিতে পানি খরচ কমে যাবে। অসচেতন কৃষকগণ নগদ টাকা ও পানি খরচ বাঁচানোর লোভে পড়ে এটা করে নিজের সর্বনাশ নিজে ডেকে আনছে।
কিন্তু তারা জানে না যে, জমির উপরের মাটিতে খাদ্য উৎপাদনের মূল আধার গুলো থাকে ।এই মাটি চলে গেলে উৎপাদন অনেক কমে যায়। ১০-১২ বছরেও আগের অবস্থায় ফিরে আসে না কৃষি জমি। এটা শুধু কৃষকের ক্ষতি নয় ,আমাদের জাতীয় খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য বড় ক্ষতি।
উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১পৌরসভার প্রায় দুই শতাধিক কৃষি মাঠে মাটিখেকো দালালরা ভেকু মেশিন, টাক্ট্রর ও আইসার গাড়ির সাহায্যে কৃষি জমি নিধন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। দেখার যেন কেউ নেই, মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও বর্তমানে অভিযান পরিচালনা বন্ধ রয়েছে। মাটি খেকো দালালদের কৃষি জমির মাটি কাটা নিধন কমছে না।
এদিকে কৃষি মাঠ থেকে মাটি নিয়ে রাস্তায় উঠার জন্য, এসব মাটি খেকো দালালরা গ্রামীণ সড়ক কেটে ড্রাইব্রেশন করে গ্রামীণ জনপদের রাস্তাগুলো ধ্বংস করছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দকৃত গ্রামীণ জনপদের এ সড়কগুলো মাটি খেকো দালালদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ সড়কের বেহাল দশার কারণে জনদুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসব কৃষি জমির মাটি পারাপারে মাটি খেকো দালালরা সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত দানব ট্রাক্টর ব্যবহারে সড়কে ধুলাবালি, ভযাবহ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের অভিমত এসকল মাটি খেকোদের দৌরাত্ম থামাতে হলে প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।