মনিরুল ইসলাম মনির :
চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা ও ধনাগোদা নদী মতলব উত্তর উপজেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি, আউস, আমন ও বোরোর মতো কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক গ্রীষ্মকালীন শাক-শবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। চাঁদপুরে এবারের শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ ৫ হাজার হেক্টর ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১২ হাজার ৫শ মে.টন। এর মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১ টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। নারীরাই এসব শাক-সবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। গরু, ছাগল , হাঁস , মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালনে মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রণীভূমিকা পালন করে আসছে।
দিন-রাত পরিশ্রম করেই তারা এ শাক-সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে । কোনো কোনো এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে তারা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষাবাদ করে আসছে। তাদের জীবিকার প্রধান বাহন কৃষি,সবজি চাষাবাদ ও হাঁস, মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালন।
চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা,মরিচের পরেই শাক-সবজির স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক। চাঁদপুরের উৎপন্ন শাক-সবজি নৌ-পথে দেশের বিভিন্ন শহরে বন্দরে চলে যায় ।
আবহাওয়ার অনুক‚ল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক শাক-সবজির উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। চাষীরা ঋণসহায়তা পেলে শাক-সবজি চাষাবাদে আরোও উৎসাহী হতো।
চরাঞ্চলগুলি হলো- মতলবের চরইলিয়ট, চর কাশিম, সবজি কান্দি, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চরওয়েস্টার, চরওমেদ, বাহের চর, চর জহিরাবাদ, খুনের চর ইত্যাদি।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, চরাঞ্চলের উৎপন্ন শাক-সবজি খুবই সতেজ ও তরতাজা। এসব শাক-সবজিতে কোনো রকম ফরমালিন মেশানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। কেননা তারা বিক্রির জন্যে দিনের উঠানো গুলো দিনেই বাজারে বসে বিক্রি করে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগন কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে আসছে নিরাপদ সবজি উৎ’পাদনের জন্য। এ উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।