জহিরুল ইসলাম জয় :
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ হাজীগঞ্জের প্রকৌশলী বাপ্পি হত্যার দু বছর পার হচ্ছে! প্রশাসন এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, তদন্তের অগ্রগতি কি? এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েগেছে মূল হত্যাকারীরা। তা হলে কি এ ভাবেই মাললার অগ্রগতি চলতে থাকবে? এ হত্যাকান্ড নিয়ে জনমনে রয়েছে কৌতুহল। এ রহস্যের শেষ কোথায়।
প্রকৌশলী বাপ্পি’র পরিবারের দাবী, আমরা কিছুই চাইনা, আমরা আমাদের সন্তানের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার দেখতে চাই।
তথ্য সুত্রে জানাযায়, হাজীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো. সেলিম মিয়ার বড় ছেলে আবু বকর (বাপ্পি), সে নথ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়ন রত ছিলেন। পরবর্তীতে বাবার ব্যবসা দেখা শুনার জন্য এলাকায় এসে বাবার ব্যবসার দায়িত্ব নেন। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরত যায়নি। প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাসায় যেতে দেরি দেখেই পরিবারের লোকজন তাকে খুজতে বের হন। কিন্তু এর মধ্যেই প্রকৌশলী বাপ্পি’র হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিরও সুইচ বন্ধ পেয়ে পরিবারের লোকদের আরো হতাশা বেড়ে যায়।
ঐ রাতেই পরিবারের লোকজন ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশসহ সারা রাত খোঁজাখুজি করেও বাপ্পিকে না পেয়ে পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারী সকালে আলহাজ¦ মো. সেলিম মিয়া হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারী কুমিল্লা র্যাব কার্যালয়েও একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু কোন অভিযোগেই প্রকৌশলী বাপ্পিকে খুঁজে বের করতে পারেনি।
২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ সকালে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কের জিয়ানগর ছোলাইমান ব্যাপারীর বাড়ীর (৪ফুট পানি ওয়ালা) পুকুরে প্রকৌশলী বাপ্পি’র লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পুরো হাজীগঞ্জে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রকৌশলী বাপ্পি’র লাশ পাওয়ার পর একটি মহল অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে এ হত্যাকান্ডটি পরিবারের লোকজনই করেছে এবং প্রকৌশলী বাপ্পি আত্মহত্যা করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। সেই গুজবে আইন শৃঙ্খালা বাহিনীও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। যা শুনে পুরো পরিবারটি হতাশ হয়ে পড়ে।
মামলার কিছুদিন যেতেই প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাবা আলহাজ্ব মো. সেলিম মিয়া মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে হস্তান্তর করেন। সে থেকেই বর্তমানে পিবিআই পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছেন। পিবিআই পুলিশ গত দু বছরেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাবা ও মায়ের সাথে কথা বললে তিনারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাপ্পি’র কোন শত্রু নেই, সে অত্যান্ত সান্ত ও চুপচাপ থাকতেন। সেদিন রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পরপরই তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া পাই। ঐ রাতে বহু খোঁজা খুজি করেছি। র্যাব-পুলিশের কাছে গিয়ে ছেলের নিখোঁজের সন্ধান চেয়েছি, কিন্তু পুলিশ তাকে খুজে বের করতে পারেনি। দুদিন পর ছেলের লাশ পেয়েছি। সে সময় আমাদের পরিবারের সদস্যদের কি অবস্থা হয়েছে তা শুধু আমরাই জানি। আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে কিছু অপপ্রচার দেখে নিজেরাই হতাশ হয়ে পড়েছি। তিনারা আরো বলেন, কেউ কেউ অপপ্রচার করছিলো, প্রকৌশলী বাপ্পি নাকি আত্মহত্যা করছে। যদি তাই হয়, তা হলে ৪ ফুট পানির মধ্যে কি ভাবে আত্মহত্যা করে। আর আত্মহত্যা করতে কেনো সে ৩ মাইল দুরে যাবে, আমার বাসার পাশেই তো অনেক নিস্তব্ধতা রয়েছে। আমাদের ছেলে বাপ্পি আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যার পিছনে যেই থাকুক, তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হউক, এটাই প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী।