ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বখাটের চুরিকাঘাতে কোরআনের হাফেজ, দাখিল
পরীক্ষার্থী মো. সাজিদুল ইসলাম গুরতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে
চিকিৎসা নিচ্ছে। আহত সাজিদুল ইসলামের বড় ভাই বাদী হয়ে ঐদিনই ফরিদগঞ্জ
থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২২ আগস্ট মঙ্গলবার ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের
গাজীপুর আহম্মদিয়া ফাজিল মাদরাসা বনাম গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের
মধ্যকার একটি প্রিতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচ চলাকালীন মূহুর্তে
গাজীপুর আহম্মদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাজিদুলের সাথে
স্থানীয় শাওন নামের এক বখাটের আক্রমণের স্বীকার হয়। খেলা শুরু হওয়ার পর দর্শক
সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলো শাওন। এক পর্যায়ে সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শক
শাওনের কাছে চলে যায় ফুটবল। খেলায় অংশ নেওয়া সাজিদুল তখন মাঠের বাহির
থেকে ফুটবল আনতে গেলে বাঁধে বিপত্তি। বখাটে শাওন ফুটবল আটকে রাখে।
অনাকাঙ্ধিসঢ়;ক্ষত ভাবে খেলার সময় নষ্ট হওয়ায় আক্রমনের স্বীকার হওয়া সাজিদুল
কিছুটা রেগে যায়। তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু
হয়। এতে খেলোয়াড় এবং স্থানীয় কিশোররাও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
খবর শুনে গাজীপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সেখানে ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে
আনেন। আঘাতপ্রাপ্ত সাজিদুলের বাড়ি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের
কেরোয়া গ্রামে। গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন। সে সময়
সেখানে এক উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন পরিস্থিতি শক্ত
হাতে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দুই পক্ষের অভিভাবকে ডেকে এনে বিষয়টি সামাধান করে
সবাইকে বিদায় দেন। সাজিদুল বাড়ি যাওয়ার পথে মুখে মাস্ক পরে শাওন তার বুকে
চুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। সাজিদুলকে দ্রæত চিকিৎসার জন্য ফরিদগঞ্জ
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তার অবস্থা খারাপ দেখে
চাঁদপুর রেফার করে। চাঁদপুরও তাকে না রেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার করে।
এ বিষয়ে গাজীপুর আহাম্মদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন এ
প্রতিনিধিকে বলেন- গ্রীষ্মকালিন খেলাধুলার জন্যে প্রস্তুতি ম্যাচ হিসেবে
আমরা একটা খেলার আয়োজন করি। যখন খেলা শুরু করবো তখনই বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃষ্টির কারণে আমরা খেলা বন্ধ করে দিই। খেলা পাগল ছেলেরা মাদ্রাসা মাঠে না
খেলতে পেরে মাদ্রাসার পাশেই একটা মাঠে খেলতে নেমে পড়ে। হঠাৎ আমি শুনতে
পাই তারা মারামারি করছে। আমি সেখানে ছুটে গিয়ে দু’জনকে মাদ্রাসায়
নিয়ে আসি এবং শাওনের বাবাকে খবর দেই। দুই গার্ডিয়ানের মাধ্যমে বিষয়টি
সামাধান করে সবাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। সাজিদুল বাড়িতে যাওয়ার পথে
শাওন মুখে মাস্ক পড়ে ওর উপর অর্তকিত হামলা করে এবং বুকে চুরি দিয়ে আঘাত
করে। ছেলেটি কোরআনে হাফেজ এবং মেধাবী শিক্ষার্থী। সে এবার বিজ্ঞান
বিভাগ থেকে দাখিল পরীক্ষা দিবে।’
১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাঈন উদ্দিন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন-
গ্রীষ্মকালিন খেলাধুলার প্রস্তুতি মূলক খেলার মধ্যে বহিরাগত একটি ছেলে এসে
গন্ডগোল করে। পরে অধ্যক্ষের হস্তখেপে তা নিয়ন্ত্রনে আসে। সামাধানের পর সাজিদুল
বাড়ি যাওয়ার পথে শাওন ক্ষুর দিয়ে মেধাবী ছেলেটির বুকে আঘাত করে।’
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এস. আই সেলিম এ প্রতিনিধিকে বলেন-
অভিযোগের আলোকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানতে পারি বখাটে শাওন এলাকাতে
থাকে না। খেলাকে কেন্দ্র করে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অধ্যক্ষ তা
মিটিয়ে দিয়েছেন। সবাই যখন বাড়ির দিকে রওয়ানা দিয়েছে তখনই হঠাৎ করে
শাওন, ছেলেটির বুকে আঘাত করে।’
অভিযুক্ত শাওনের পিতা ইদ্রিস পাঠান দুলাল এর সাথে যোগাযোগ করে তাকে না
পাওয়াতে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আঘাতপ্রাপ্ত সাজিদুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের মুঠো ফোনে না পাওয়ার
কারণে তাদের বক্তব্যও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়- বখাটে শাওন, এর আগেও এলাকায় এমন কান্ড ঘটিয়েছে।
তার বিরুদ্ধে নেশা করার অভিযোগ রয়েছে।