চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের জেরে প্রেমিককে নিয়ে প্রবাসী স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রীকে আটক পুলিশ এবং ঘটনার পর পালিয়ে যায় পরকীয়া প্রেমিক। রোববার (৮ অক্টোবর) রাতে উপজেলার হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাকরোডস্থ একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদিআরব প্রবাসী মো. এমরান হোসেন (৪০) ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির মো. আবুল বাশারের ছেলে। তার স্ত্রী ফারজানা বেগম (৩০) হাজীগঞ্জ উপজেলার জাখনি গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে। তারা দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
নিহতের স্ত্রী ফারজানা বেগমের সাথে সংবাদকর্মীদের কথা হলে তিনি জানান, রোববার এশার নামাজের সময় আশেক তাদের বাসায় আসে। এসময় তার স্বামীর সাথে আশেকের কথা হয়। এরপর তিনি টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখেন তার স্বামীর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তিনি তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আমি টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখি আশেক আমার স্বামীকে কুপাচ্ছে। এসময় আমি তাকে বাঁচাতে গেলে সে আমাকেও আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আমি আমার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আশেক তাকে বিরক্ত করতো বলে তিনি জানান।
এমরান হোসেনের বোন রিনা বেগম সংবাদকর্মীদের জানান, আমার ভাবির (ফারজানা বেগম) সাথে তার বড় বোনের চাচাতো দেবর শাহরাস্তি উপজেলার আজাগরা গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ আশেক এলাহী বাবুর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এঘটনায় অনেক ঝামেলা ও দেন-দরবার হয়েছে। তারা আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।
এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, তারা (ফারজানা বেগম ও সৈয়দ আশেক এলাহী বাবু) আমার ভাইকে পরিকল্পনা করে জবাই করে হত্যা করেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই, আমি মামলা করবো।
এ দিকে খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাক রোডের আমেনার বাসার ৩য় তলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার এমরান হোসেনের ভাড়া বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. গোলাম মাওলা নঈম জানান, এমরান হোসেনকে আমরা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অর্থ্যাৎ হাসপাতালে আনার পূর্বেই তিনি মারা গেছেন। এসময় তিনি বলেন, তাদের দেওয়া তথ্য মতে ঘটনা সংশ্লিষ্ট ফারজানা নামের একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, এমরান হোসেনের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এমরান হোসেনের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামিকাল ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।