দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়াতে ১৯৮৮ সালে মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নির্মাণ
করা হয়। ১৩ হাজার ৬শ’ ২ হেক্টর জমিতে সেচ উপযোগী করে প্রকল্পটি চালু করা হলেও বর্তমানে
১০ হাজার হেক্টর দাঁড়িয়েছে। প্রকল্পের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বাড়িঘর সহ অবকাঠাম নির্মাণ করায় ৩৫
বছরে প্রকল্পভুক্ত জমির পরিমাণ ৩০ ভাগ কমছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের
অভ্যন্তরে ২০১০ সাল পর্যন্ত গড় উৎপাদন ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ২১৯ মেট্টিক টন। কিন্তু প্রকল্পের ভিতরে
ক্রমাগত নগরায়ণের ফলে ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ২৩ মেট্টিক টন।
চলতি বছর বোরো মৌসুমে সারে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। বিপরীতে সাড়ে ২৭
হাজার মেট্টিক টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৬০০ মেট্টিক টন আউশ ও আমন
মৌসুমেও সাড়ে ৩ হাজার মেট্টিক টন ধান উৎপন্ন লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল বেড়িবাঁধটি বিতরে
রয়েছে ২১৮ কিলোমিটার সেচখাল। ওইসব সেচ খালের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান
পাট নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। ফলে সেচ খালগুলো দিয়ে পানি সরবরাহ না হওয়ায় প্রতি বছর
ফসলী জমি চাষাবাদ কম হওয়ার কারন দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩৪৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়ন করবে।
জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এর ফলে ওই এলাকার ৬ হাজার
৭০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এনে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১১ হাজার ৪৭১ মেট্রিক টন ধান
উৎপাদন সম্ভব হবে।
প্রকল্প এলাকার কৃষকরা জানায়, প্রকল্পটি শুরুতে তিন ফসল ঘরে তুলতে পারলেও বর্তমানে তা পারা
যায় না। প্রকল্পের অভ্যন্তরে ফসলী জমিতে বাড়ীঘড় নির্মান ও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আর
বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতা সহ নানা করনে দিন দিন ফসলী জমি কমছে।
এছাড়াও প্রতি বছরই বিভিন্ন অবকাঠাম সংস্করণ নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও
কাজের কাজ কিছু হচ্ছেনা। ওই সংস্কার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রকল্পের
কিছু অসাধু কর্মকর্তা সহ একটি মহল।
সেচ প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) জয়ন্তু পাল বলেন, প্রকল্পের ভিতরে বাড়িঘর ও
নির্মাণ হওয়ায় কৃষিজমি কমেছে। এ ব্যাপারে কৃষিজমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মান না
করার জন্য পরামর্শমূলক গণ সচেতনতা চালানো হবে।