Header Border

ঢাকা, সোমবার, ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
শিরোনাম
হাজীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে হ*ত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার হাজীগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য হলেন সাংবাদিক মো. মিঠুন মিয়া  হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ কচুয়া বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধে গর্ভবর্তী নারীকে মারধর, আহত- ৫ নারায়ণগঞ্জে‌ সওজের জমি দখল করে ভূমিদস্যু আঁখিনূর চৌধুরী গংদের চাঁদাবাজি মতলব উত্তরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালের মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায় অপারেশন ডেভিল হান্ট: মতলব উত্তরে মায়া চৌধুরীর দুই কর্মী আটক ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত সিয়ামের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজন ৫ লক্ষ টাকা চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধে মোবাইল ব্যবসায়ীকে কু*পি*য়ে হ*ত্যা, আটক ৩

হাজীগঞ্জে জীবিত প্রমাণে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মৃত এক মুক্তিযোদ্ধা!

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ ||
হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের মৃত আম্বর আলী বেপারীর ছেলে মো. ফজলুল হক (৬৮)। তারা সাত ভাই-বোন। এর মধ্যে তার বাবা, মা, বড় দুই ভাই ও এক বোন মারা গেছেন। ভাইদের মধ্যে তিনি সবার ছোট। ১৯৭১ইং সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার জন্য তিনি ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পৃথিবীর মানচিত্রে বীরের বেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন হয় রাষ্ট্র। আল্লাহর অশেষ কৃপায় বেঁচে যান ফজলুল হক। এরপর স্বাধীন দেশের মুক্ত বাতাসে তিনি বাবা, মা, ভাই-বোনসহ জীবন-যাপন করেন। আজ পর্যন্ত তিনি বেঁচে আছেন। সরকারের দেয়া সম্মানি (মুক্তিযোদ্ধা ভাতা) তিনি নিয়মিত পাচ্ছেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও চার মেয়েকে নিয়েই তার সুখের সংসার।
মো. ফজলুল হকের লাল মুক্তিবার্তা নং-০২০৫০৩০০৭৬,  বেসামরিক গেজেট নং-১১৪১, মুক্তিযোদ্ধা নম্বর- ০১১৩০০০১৪০২, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদপত্র নং- ৬৬৬৪২। জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৩৭০৯৫৬৩০৬২, জন্ম নিবন্ধন নম্বর- ১৯৫৩১৩১৪৯৫৫১০৩৮৯৬, ইউনিয়নের হোল্ডি নং-২৭৬, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বিদ্যুৎ বিলের হিসাব নং- ০৩-১৪১-২১৫০।
সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু বিপত্তি ঘটে ২০২০ইং সালে। তার বড় ভাই (তৃতীয়) মো. মজিবুল হক মারা যাওয়ার পর। সেই থেকে হয়রানি শুরু। যা আজও চলমান। মারা গেছেন মজিবুল হক, অথচ জীবিত ফজলুল হক মৃত হয়ে আজও সরকারি অফিসের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় চেয়ারম্যান, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কারণ, তিনি জীবিত নয়, মৃত। এই অভিযোগে বন্ধ হয়ে গেছে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা।
কথা হয় ফজলুল হকের সাথে। তিনি বলেন, ২০২০ইং সালে ভাই মজিবুল হক মারা যান। এরপর তার ছেলে-মেয়েরা (ভাতিজা) তাকে (ফজলুল হক) মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার জন্য আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনিও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে দেখা করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেন। বর্তমানে তদন্ত কমিটির কাজ চলমান রয়েছে।
ভুক্তভোগী ফজলুল হক বলেন, আমি জীবিত প্রমাণে তদন্ত কমিটির কাছে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট আমার সকল কাগজপত্রসহ ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়ন, ওয়ারিশ সনদ, জন্ম নিবন্ধণ, নাগরিক সনদ, টেক্স, ভূমি উন্নয়ন করের রশিদ, বিদ্যুৎ বিল ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েছি। এছাড়াও আমার ভাই মৃত মজিবুল হক থেকে ক্রয়কৃত সম্পত্তির দলিল, তার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রত্যয়ন এবং মেম্বারকে দেয়া ১৯৭৩ সালে রেল ডাকাতির চিঠি দিয়েছি।
মজিবুল হক নাকি ফজলুল হক, কে মারা গেছেন ? বিষয়টি জানতে কথা হয় তাদের ভাই (দ্বিতীয়) আব্দুল হকের সাথে। তিনি মজিবুল হকের ছোট, কিন্তু ফজলুল হকের বড় ভাই। আবার মজিবুল হক একদিকে তার বড় ভাই, অপর দিকে বেয়াই। কারণ, তার ছেলে মনির হোসেন ও মজিবুল হকের মেয়ে শিল্পী আক্তার স্বামী-স্ত্রী। এ বিষয়ে আব্দুল হক জানান, মজিবুল হক (ভাই ও বেয়াই) মারা গেছেন, ফজলুল হক বেঁেচ আছেন।
তাদের জেঠাতো ভাই সেকান্তর আলী (৮০) ও  চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম (৭০) এবং একই বাড়ির খোরশেদ আলমের (৪৫) সাথে কথা হলে তারা জানান, মজিবুল হক মারা গেছেন এবং ফজলুল হক বেঁচে আছেন।
এ দিকে ওই বাড়িতে অভিযুক্ত মজিবুল হকের ছেলে ও মেয়েসহ তাদের পরিবারের কোন সদস্যকে না পাওয়ায় এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতে না পারায় তাদের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, মজিবুল হক মারা গেছেন এবং ফজলুল হক বেঁচে আছেন। এ বিষয়ে আমি জীবিত ফজলুল হককে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যয়ন দিয়েছি। এ ছাড়াও তাদের পারিবারিক ওয়ারশি সনদ দিয়েছি। সেখানেও মৃত মজিবুল হক উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময়ে তিনি, ফজলুল হকের বেঁেচ থাকার বিষয়টি আমি শতভাগ নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, তদন্তকালীন সময়ে তাদের পারিবারিকভাবে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। তাই বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে পূণরায় তদন্ত করা হবে।

আরো পড়ুন  শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হাজীগঞ্জে বস্ত্র উপহার

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

হাজীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে হ*ত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার
হাজীগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য হলেন সাংবাদিক মো. মিঠুন মিয়া 
হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
কচুয়া বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধে গর্ভবর্তী নারীকে মারধর, আহত- ৫
নারায়ণগঞ্জে‌ সওজের জমি দখল করে ভূমিদস্যু আঁখিনূর চৌধুরী গংদের চাঁদাবাজি

আরও খবর

error: Content is protected !!