অনলাইন ডেস্ক:
এবার বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করল ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী।
বুধবার (৩ মে) আশিকাটি ইউনিয়নের এম এম নূরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে ইংরেজি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে। এর আগে সকাল ৭টায় নিজ বাড়িতে তার বাবা ইন্তেকাল করেন।
জানা যায়, ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি এ বছর শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীয় অংশগ্রহণ করে। সে একই ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও এলাকার বেপারী বাড়ির (ইচলী বাড়ি) মৃত মকবুল হোসেন বেপারীর ছোট মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, মৃত মকবুল হোসেন বেপারী দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে তিনি ব্রেন স্টোক করেন এবং একবার গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। সর্বশেষ গত দু’দিন আগে তিনি জ্বর ও পেট ব্যথা নিয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। বুধবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিহত মকবুল দুই কন্যা সন্তানের জনক।
মৃত মকবুল হোসেনের ফুফাতো ভাই আব্দুল বারেক খান বাবুল বলেন, ‘মকবুল সকালে মারা যায়। আজ আবার তার ছোট মেয়ের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। বাবার মৃত্যুতে মেয়ের তো হুঁশ নেই। তারপরেও সবাই মিলে বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাকে পরীক্ষা দিতে পাঠায়েছি। আল্লাহ জানে কী পরীক্ষা দিয়েছে।’
স্থানীয় মেম্বার সোহাগ পাটোয়ারী বলেন, ‘মৃত মকবুল হোসেন দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। পরিবারটির অবস্থাও তেমন ভালো না। সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করলেও তার মেয়েকে পরিবারের সবাই বুঝিয়ে-শুনিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে বলে। সবার কথায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।’ বুধবার বাদ আসর মৃতের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহেল রুশদী জানান, ফেরদৌসী মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। আমাদের বিদ্যালয়ে ব্যবসার শিক্ষা বিভাগে তার শ্রেণী রোল ছিল তিন।
তিনি বলেন, ‘তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তাদের বাড়িতে আমাদের বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক গিয়েছেন। তিনি পরিবারটির পাশে আছেন। আমরা ফেরদৌসীর পাশে আছি এবং সে যেন কোনোভাবেই মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে, সে চেষ্টা করছি। সামনে যাতে সবগুলো পরীক্ষায় সে অংশগ্রহণ করে; সেজন্য আমরা তাকে সহযোগিতা করব। এছাড়াও ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ফেরদৌসীর যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করব।’