মনিরুল ইসলাম মনির:
মতলব উত্তরে ৪৫ ঘন্টা পর ইটভাটা শ্রমিক মিনা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মতলব উত্তর
উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের সাহেব বাজার সংলগ্ন বেড়ীবাঁধের বাহিরে এএসবি
ব্রিকস ফিল্ড (ইট ভাটা)। এ ইট ভাটায় প্রতি বছরই দেশের দুর দুরান্ত থেকে ৬ মাসের জন্য মহিলা,
পুরুষ শ্রমিকরা কাজ করতে আসে।
গত (০৬ মে) শনিবার সকাল ১০ টায় ধনাগোদা নদীতে শ্রমিকরা নারী, পুরুষ ৫/৬ জন দল বেদে
গোসল করতে যায়। দলের মধ্যে মিনা বেগম (৪০) পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয় আর বাকীরা তীরে
উঠে। নিখোঁজ হওয়া মিনা বেগমের সাথে তার ছেলে ও ছিল। নিখোঁজ মিনা বেগম কে তার
ছেলে এবং সহকর্মীরা দিশেহারা হয়ে অনেক খোজাখুজি করে না পেয়ে ফায়ার ব্রিগেড কে
খবর দিলে চাঁদপুর নদী ষ্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ডুবুরি দল নিয়ে ঘটনাস্থল এসে প্রায়
সাড়ে চার ঘন্টা উদ্ধার কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের ইনচার্জ মো. কবির হোসেন। তাদের আয়ত্তে¡ না থাকার কারনে
উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করেন। দু’দিন তার আত্মীয় স্বজন ও ব্রিকস ফিল্ডের মালিক পক্ষের লোকজন
অনেকেই ট্রলার যোগে বা অনেকই নদীর তীর বর্তি এলাকায় খোজাখুঁজি করে ও নিখোঁজ
মিনা বেগম এর সন্ধান মিলেনি।
দুদিন পর তৃতীয় দিন ৮ মে সোমবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের সময় প্রায় সাড়ে ৪৫ ঘন্টা
অতিবাহিত হবার পর সিপাই কান্দি নামক স্থানে নদীতে মিনা বেগমের লাশ ভেসে ওঠে দেখতে
পায় সিএনজি চালক মান্নানের স্ত্রী। তিনি আশেপাশের লোকজনকে বলাবলি করলে ব্রিকস ফিল্ডের
মালিক পক্ষের লোকজনকে খবর দিলে মৃতের স্বজনরা মিনা বেগমের লাশ নদী থেকে উঠিয়ে ব্রিকস
ফিল্ডের কাছে নদীর তীরে নিয়ে রাখা হলে মোহনপুর নৌ-পুলিশ স্টেশনকে খবর দিলে নৌ-পুলিশ
ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান’সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল এসে মৃতের লাশের
সুরুতহাল রির্পোট তৈরী করে লাশ তার স্বজনদের সম্মুখে দুপুর ২টায় তার স্বামী ও পরিবার
পরিজনদের কাছে হস্থান্তর করে। লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যায় মৃতের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ
জেলায়। মৃত মিনা বেগমের ৫ সন্তান। ৪ মেয়ে, ১ ছেলে। বড় মেয়ে চম্পা (২০) কে বাদে দ্বিতীয়
মেয়ে জান্নাত (১৮) তৃতীয় এক মাত্র ছেলে মোঃ কাউসার (১২), চতুর্থ মেয়ে ইসনাত (১০) ও ৫ম
মেয়ে মিতু(৮) বছর। এ চার সন্তান সহ তার ভাই এক সাথে কাজ করতেন। মৃতের স্বামী দ্বিতীয়
বিবাহ করে ঢাকায় বসবাস করতেন। ঐ ঘরে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এ ঘটনা শোনে মৃতের স্বামী কিরন মিয়া, মৃতের বড় মেয়ে চম্পা ও মৃতের বড় বোন রেখা বেগম
ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। শেষ পর্যন্ত সকল ঝল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সাড়ে ৪৫ ঘন্টা
অতিবাহিত হবার পর স্বজনরা মিনার লাশ খুজে পেল।