মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্:
গত এক সপ্তাহে চাঁদপুরে তীব্র তাপদাহ ও বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ ও বিপর্যস্ত। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তীব্র এই তাপদাহ ও লোডশেডিংয়ের ফলে রির্চাজেবল (চার্জার) ফ্যান, লাইট, সোলার ও আইপিএসের রমরমা বানিজ্য গড়ে উঠেছে ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স দোকান ও শো-রুমে।
অপর দিকে তীব্র গরমে ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এমন আবহওয়ায় প্রায় ঘরেই এখন জ্বর, সর্দি ও কাশি। এতে হিটস্ট্রোক, চর্মরোগসহ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই, অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে কিছু নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
দেখা গেছে, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রখর রোদ আর তাবদাহ। আর তীব্র তাপদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, কয়লা ও জ¦ালানি সংকটের কারণে হচ্ছে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে উপজেলা সদর থেকে গ্রামাঞ্চলের এলাকাগুলোতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। অনেকে জানান, ’প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা, কোথাও আট থেকে দশ ঘন্টা, আবার এর চেয়ে বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত এবং ঘুমাতে পারছেনা মানুষ।
এ দিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে শ্রমজীবি মানুষেরা। দেখা দিয়েছে ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেমে এসেছে স্থবিরতা। তবে রমরমা ব্যবসা করছেন চার্জার ফ্যান, লাইট, সোলার ও আইপিএস বিক্রেতারা। তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে তাদের দোকানে বিক্রি বেড়েছে।
রোববার জেলার বিভিন্ন উপজেলা সদর ও বড় বড় হাট-বাজারগুলোতে দেখা গেছে, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্সের দোকান ও বিভিন্ন কোম্পানির শো-রুমে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। লোডশেডিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে কেউ কিনছেন ফ্যান, কেউবা লাইট। পিছিয়ে নেই, আইপিএস ও সোলারের ক্রেতা ও বিক্রেতারাও।
কথা হয় কয়েকজন ক্রেতার সাথে। তারা জানান, তীব্র গরম আবার বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের নিয়ে পরিবারের লোকজন পড়েছেন বিপাকে। বৃষ্টিরও দেখা নেই, আবার কবে থেকে লোডশেডিং বন্ধ হচ্ছে তাও বলা যাচ্ছেনা। তাই, বিকল্প পথ খুঁজতেই রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইট কিনছেন তারা।
অন্যদিকে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা কিনছেন সোলার ও আইপিএস। অপর দিকে হঠাৎ করে চাহিদা ও বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে যেমন চার্জার ফ্যানের, তেমনি দামও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে আইপিএস ও সোলার প্যানেলের। দাম বাড়ার বিষয়টি বিক্রেতারাও জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এ বছর তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ধারণার তুলনায় বেড়ে গেছে। যার ফলে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে গ্যাস সংকট এবং ডলার সংকটের কারণে তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও পুরোপুরি ব্যবহার করছে না কর্তৃপ। তাছাড়া সম্প্রতি সময়ে কয়লা সংকটের কারণে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও উৎপাদন কমেছে। যার ফলে লোডশেডিং বেড়েছে।