পবিত্র ঈদুল আযহার আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। অথচ ঈদকে সামনে রেখে হাজীগঞ্জে এখনো জমে উঠেনি কোরবানির পশুর হাটগুলো। বাজারগুলোতে একদিকে যেমন গরুর সংখ্যা যেমন কম, তেমনি নেই ক্রেতাদের আনা-গোনাও নেই বললেই চলে। তারপরও যারাই বাজারে আসছেন, দরদাম পরখ (যাচাই-বাছাই) করে চলে যাচ্ছেন। সোমবার (১৯ জুন) বাকিলা ও হাজীগঞ্জের গরুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, এবার ঈদে হাজীগঞ্জে কোরবানির পশুর চাহিদা প্রায় ১৭ হাজারের বিপরীতে মজুদ আছে প্রায় ১৫ হাজার ৫০০টি। উপজেলায় পশুর হাট আছে ২৫টি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ এবং মহাসড়কের পাশে কোরবানির পশুর হাট বসার সুযোগ নেই। তবে বাকিলা ও কৈয়ারপুল গরুর বাজারটি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এবং স্থান সংকুলান অভাবে সড়কের পাশেই গরুর বাজার দুইটি বসে থাকে।
বিভিন্ন এলাকা ও সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে স্থায়ী এবং অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে গরু আসতে শুরু করেছে। যদিও এর সংখ্যাটা তুলনামূলক অনেক কম। এসব বাজারে দরদাম পরখ (যাচাই-বাছাই) করতে আসছেন ক্রেতারা। তবে পশু ক্রয়ের প্রতি তাদের ঝোঁক অনেক কম। দরদাম জেনে কিছুটা ধারণা নিয়ে নিচ্ছেন তারা। ক্রেতাদের পাশাপাশি বিক্রেতারাও যাচাই করে নিচ্ছেন বাজারের চাহিদা ও দরদাম।
এদিকে ক্রেতা-বিক্রেতা, ইজারাদার ও বিভিন্ন বাজার কমিটির লোকজন মনে করছেন, আগামিকাল শুক্রবার থেকে হাজীগঞ্জের কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠবে, চলবে জমজমাট বিকিকিনি। এদিকে বাজারে যারা পশু ক্রয় বা দরদাম পরখ করতে এসেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা হয়। তারা জানান, বিক্রেতারা গরুর দাম হাঁকছেন অনেক বেশি। তবে বিক্রেতারা জানান, পশু খাদ্যের দাম বেশি। তারপরও পশুর দাম নাগালে।
বিক্রেতারা আরো জানান, ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও লোকমুখে তারা জানতে পেরেছেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে গরু আসতে শুরু করেছে। এতে দেশীয় খামারি ও গৃহপালিতরা লোকসানের মুখে পড়বেন। এমন আশঙ্কাই করছেন তারা। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, আশা করছি ভারত থেকে দেশে অবৈধভাবে গরু আসা বন্ধ করবে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
বাকিলা বাজারের ইজারাদার জানান, আশা করছি আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে বাজার জমে উঠবে। বাকিলা বাজারের সাপ্তাহিক হাটবাজার বসে সোমবার ও বৃহস্পতিবার। হাজীগঞ্জ বাজারের ইজারাদার জানান, শুক্রবার থেকে বেচাকেনা জমবে। হাজীগঞ্জ বাজারের সাপ্তাহিক হাটবাজার বসে সোমবার ও শুক্রবার। ইয়াছিন ভুঁইয়া নামের একজন ক্রেতা জানান, এবারের বাজার বেশ চড়াই মনে হচ্ছে।
এ দিকে হাজীগঞ্জে কোরবানির পশুর চাহিদা প্রায় ১৭ হাজার হলেও, যার বিপরীতে পশুর মজুদ আছে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার। ঘাটতি দেড় হাজার। তবে কাগজে কলমে ঘাটতি থাকলেও সেটি ঘাটতি নয় বলে জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, পশু ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই।
কারণ হিসাবে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর জানান, কোরবানির পশুর হাট শুরু হলে, প¦ার্শবর্তী উপজেলাসহ খামারি, পালিত, নিয়মিত ও সিজনাল ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশু নিয়ে হাটে আসেন। এতে করে পশুর ঘাটতি থাকার কথা নয়, বরং উদ্বৃত্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বের বছরগুলোতে এমনটি দেখা গেছে, উপজেলার ও জেলার বাহির থেকে প্রচুর কোরবানির পশু হাটে আসে। যার ব্যতিক্রম এ বছরও হবেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ শাহীন মিয়া জানান, কোরবানীযোগ্য পশুর কোন ঘাটনি নেই। খামারি ও গৃহপালিত এবং উপজেলার বাহিরে থেকে আসা পশু দিয়ে চাহিদা ও সাপ্লাই সমান হবে।