চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মানা হচ্ছেনা শোকের মাসের নির্দেশনা। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করতে হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ আগস্ট থেকে মাসব্যাপী কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। পোস্টারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ, মাসজুড়ে ব্যানার প্রদর্শন, পোস্টার বা ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার না করা এবং এলইডি বোর্ড থাকলে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘আমার দেখা নয়াচীন’ ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কর্তৃক শিশুদের জন্য প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক সব গ্রন্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রয় ও পাঠের ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান, কৃতী শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব কোন নিয়মের বাস্তব চিত্র চোখে পড়েনি। মাসজুড়ে বিদ্যালয়ের দেওয়ালের মাঝে ব্যানার প্রদর্শন থাকার কথা থাকলেও কোন কিছু নেই। তাছাড়া শিক্ষক কর্মচারীদের মাঝে নেই কোন কালো ব্যাজ ধারণ। অথচ দুইদিন পরে হচ্ছে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোকদিবস।
জানাযায়, মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ একজন কঠোর জামায়াত পন্থি লোক। যে কারনে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী থেকে শুরু করে শোকের মাসে কোন কর্মসৃচি পালন করে আসছেন না বলে পূর্বে থেকে অভিযোগ। এমনকি তার বিদ্যালয়ের ৮০ ভাগ শিক্ষক কর্মচারী বিএনপি জামায়াত পন্থি নিয়োগ পাওয়ায় এসব জাতীয় দিবস পালন না করায় নেই কোন প্রতিবাদ। মফস্বল এলাকায় বিদ্যালয়ের অবস্থান পড়ায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নেই কোন আগমন। আর এ সুযোগে প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ নিজের ইচ্ছামত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া, শিক্ষকদের উদাসীনতা ও পাইভেট বাণিজ্য, বিভিন্ন কর্মসৃচি পালনে নেই তেমন কোন বাধ্যবাদকতা আর এসব অনিয়মের কৈফিয়ত দিতে নেই কোন বিদ্যালয়ের শক্ত ম্যানেজিং কমিটি। যে কারনে প্রধান শিক্ষক নিজেই এ মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সর্ব কতির্তের অধিকারী।
মনতলা এলাকার সচেতন অভিভাবক জাহাঙ্গীর পাটোয়ারী বলেন, প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ একজন জামায়াতের লোক, ততকালীন সময়ে মোটা অংকের ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগে পেয়েছেন। গত ১৫ বছরে এ বিদ্যালয়ে সঠিক ভাবে কোন জাতীয় কর্মসৃচি পালন করা হয়নি।
মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আল-আমিন বলেন, বিষয়টি দেখে আমি নিজেও বিচলিত যে অতিগুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কর্মসৃচি এখন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আমলে নেয়নি। বিদ্যালয়ে পূর্বে থেকে বিএনপি জামায়াত পন্থি শিক্ষক কর্মচারী। সেখানে আমি কোন ক্ষমতা দেখাতে গেলে প্রশ্নবিদ্ধ দেখা দিতে পারে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমার বাবা গত মাসে মৃত্যুবরণ করায় আমি বিদ্যালয়ে আসতে পারিনি। তবে ১৫ আগষ্ট পালনে পদক্ষেপ নিচ্ছি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহআলী রেজা আশ্রাফী বলেন, বিষয়টি যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।