স্বাধীনতার ৫৩বছরে এসেও ভাবতে হয় জন চলাচলের দুর্ভোগের কথা। যখন পৃথিবীতে মানুষ আবিষ্কার করছে একটি যান দিয়ে কিভাবে জলে, স্থলে ও আকাশে সমানভাবে চলাচল করা যায়। আবার পৃথিবীর কোন কোন এলাকায় মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন হেলিকপ্টার। প্রতিটি বাড়ীতেই এক বা একাধিক হেলিকপ্টার রয়েছে। সে সময় আমাদের দেশের মানুষ ভাবছে শুষ্ক মৌসুমে কার জায়গা দিয়ে চলাচল করবে, আর বর্ষা মৌসুমে একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা।
জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১নং বালিথুবা (পঃ) ২নং বালিথুবা (পূঃ) ৩নং সবিদপুর (পূঃ) ও ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের বৈচাতলী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা রড়ই বেহাল। রাস্তা থেকেও না থাকারই মত। বর্ষায় বিপুলসংখ্যক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন জনসাধারন, স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থী, হাসপাতালগামী রোগী, জুমার মসজিদের মুসল্লীরাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। শীতের বা শুষ্ক মৌসুমে মানুষের কৃষি জমির সিমানা (আইল) দিয়ে চলাচল করতে হয়। তাতেও পড়তে হয় নান বিড়ম্বনায়। কখনও কখনও জমির মারিকদের সাথে পথচারীদের ঘটে যায় ছোট খাট বিবাদ।
উপরোল্লেখিত ই্উনিয়নের সিআইপি বেড়ী বাঁধের বাহিরের জনগন রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। ১নং ইউনিয়নের বলিয়ারপুর, বেহারিপুর সোকদী রামপুরের কিছু অংশ, ২নং ইউনিয়নের ১,২ ও ৭ নং ওয়ার্ডের রাস্তার অবস্থাও বড়ই নাজুক। ৩নং ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়ার্ডগুলি বেড়ীর বাহিরে হওয়ায় বর্ষায় কাঁচা রাস্তাগুলি দিয়ে জনসাধারন চলাচলে চরম বিপত্তি ঘটে। একই অবস্থা ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের কিছু বসিন্দার।
বহু বছর ধরে স্থানীয়রা রাস্তা নির্মান ও সংস্কারের দাবি করলেও আজ পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় বছরের পর বছর ধরে মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।কোন কোন এলাকায় নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেড়ীর বাহিরে চারদিকে অথৈ পানি। বসত বাড়ি থেকে যোগাযোগব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসাসেবা, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা জনজীবনের সকল কর্মকান্ডে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় ১নং ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার সেলিম বলেন, প্রভাবশালী লোকদের বসবাসের এলাকার রাস্তাঘাট দ্রæত মেরামত সংস্কার বা নতুন নির্মান হলেও নিন্মবিত্ত বসবাসকারীদের এলাকার উন্নয়ন খুব একটা হয় না। চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপনের বক্তব্য চাইলে বলেন, আমি বিরোধী দল থেকে নির্বাচীত হয়েছি। সরকারী দলের চেয়ারম্যানদের যেভাবে প্রাধান্য দিয়ে বরাদ্ধ দেওয়া হয় আমার বেলায় করা বিমাতাশূলভ আচচরন। চাহিদাপত্রে বা বিভিন্ন কাগজপত্রে জোরজবরদস্তি করে স্বাক্ষর নিয়ে সরকারের বরাদ্ধকৃত ডিপ টিউবয়েলগুলিও পরিষদের মাধ্যমে বিলি না দিয়ে উপরস্থ প্রতিনিধিগন তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিলি করছেন। শান্তনা এতটুকুই অন্তত বিভিন্ন ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পারছি। আর রাস্তার ব্যপারে বলেও লাভ নেই উনাদের শুপারিশ না থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগনের ভোগান্তির শেষ হবে না।
এসমস্ত এলাকার বাসিন্দা সুমন(৫২) আলমগীর (৫৫) ইদ্রিস মিয়া (৫০) আবুল কালাম (৬০) তৈয়ব আলী (৫৬)সহ বেশ কয়েকজন জানান, শীত বা শুষ্ক মৌসুমে কোনভাবে চলাচল করা গেলেও বর্ষার মৌসুম এলে কখনও কখনও প্রায় ৩ হতে ৪ ফিট জোয়ারের পানি থাকে, তাই নৌকা ছাড়া চলাচল করতে পারিনা। রাস্তা ঘাট ভালো না থাকার কারনে আমাদের মেয়ে-ছেলেদের ভালো যায়গায় বিয়েও দিতে পারিনা । আমাদের এ দুর্ভোগ কবে শেষ হবে জানি না। চেয়ারম্যান মেম্বারদের জানিয়েও কোন লাভ হয় না। তাছাড়া বেড়ীর বাইরের ব্রিকফিল্ডগুলিতে মাটিও ইটা আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত যানবানগুলির কারনে রাস্তা বেশী নষ্ট হয়।৩নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, আমার প্রায় ৭টি টি ওয়ার্ডই বেড়ীর বহিরে হওয়ায় রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। উপজেলার বিভিন্ন সভায় এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্না দিয়েও কোন লাভ হয় না।
এ সকল বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবরার হোসেন বলেন, আমি ফরিদগঞ্জে যোগদানের পর বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কার ও পাকা করা হয়েছে। কয়েকটি ব্রিজ সম্পন্ন ও কিছু ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ ভ‚মিকা রয়েছে। উনারা চাহিাদাপত্র দিলে আমরা তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চেষ্টা তদবীর করে কাজ হাসির্লে চেষ্টা করবো। সে সাথে জনপ্রতিনিধিগনের সমন্বয় ও সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমুন্নেছা বলেন, প্রাপ্ত বরাদ্ধ অনুপাতে উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছি। সরকার দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট সচেতন। আমরা চেষ্টা করছি সরকারের গ্রাম হবে শহর এ বিষটি যথাযত বাস্তবায়নের।