পোকামাকড় দমনে মতলব উত্তরে প্রাকৃতিক পার্চিং পদ্ধতি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে
উঠেছে। এতে সুফলও পাচ্ছেন অনেক চাষি। ফলে আমন মৌসুমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন
উপজেলার অনেক আমন চাষি। উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
পার্চিং পদ্ধতি ও এর ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, বাঁশের
কঞ্চি, গাছের ডাল, টি আকৃতির দ- বা বাঁশের জটা প্রভৃতি খাড়াভাবে জমিতে পুঁতে পাখি
বসার ব্যবস্থা করা হয়, আর তাকেই পার্চিং বলে। বর্তমানে ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে
এটি একটি কার্যকরী ও সফল কৃষকবান্ধব পদ্ধতি। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে কৃষককে ধান
চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হয় না। কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনায় বা রাস্তার ধারে গাছের ডাল প্রাপ্তি
সহজলভ্য বিধায় পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সারা উপজেলায়। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের
জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে কিছু উপকারী পোকাও মারা
যায় এবং কীটনাশক মানবদেহের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে জমিতে
কীটনাশক ব্যবহারও কম হয়। এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক সুন্দর এবং স্বাস্থ্যসম্মত
খাবার উৎপাদন করতে পারে।
উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের উত্তর পাঁচানী এলাকার কৃষক ছানা উল্লাহ বলেন, উপজেলা কৃষি
অফিসের কথামতো পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে উপকৃত হচ্ছি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করায়
জমিতে বিভিন্ন রকম পাখি বসে। ফসলে আক্রমণ করা পোকাদের ওরা খেয়ে ফেলে। এতে ফসলে বিষ
প্রয়োগের তেমন প্রয়োজন হচ্ছে না।
পার্চিং পদ্ধতির সুফল নিয়ে কথা বলেন উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নাউরী এলাকার কৃষক
ফয়েজ আহমেদ। তিনি বলেন, পার্চিং একটি ফলপ্রসূ পদ্ধতি। এটা ব্যবহার করে চাষের ব্যয়
কমিয়ে আনা সম্ভব। কীটনাশকের টাকা বেচে যায়। আমি আমার জমিতে পার্চিং পদ্ধতি
ব্যবহার করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, প্রাকৃতিক পার্চিং
পদ্ধতিতে ফসলি জমিতে পোঁতা ডালগুলোর ওপর পাখি বসে ফসলি জমির ক্ষতিকারক পোকা ও
পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। ফলে জমিতে কীটনাশক কম ব্যবহার করতে হয়। যার ফলে কম খরচে অধিক
ফলন পাওয়া যায়। তবে সব ধরনের পাখি পার্চিংয়ে বসে না। মূলত ফিঙ্গে, শালিক, বুলবুলি, শ্যামা,
দোয়েল, সাত ভায়রা এসব পাখি পার্চিংয়ে বসে পোকা ধরে খায়। ফসল রোপণের পরপরই পার্চিং
স্থাপন করতে হয়।