বসতঘর ভস্মীভূত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে একটি অসহায় পরিবার। যাদের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই ছিল যে ঘরটি, সেটি আজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জের ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব পোঁয়া মানিক খাঁর বাড়ির হুমায়ুন খাঁর বসতঘরে।
৭ নভেম্বর মঙ্গলবার আনুমানিক বেলা ১১টার পর বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে পরিবারের লোকজন ধারণা করছেন। এতে হুমায়ুন খাঁর প্রায় ৫-৭ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও সম্পূর্ণ ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
হুমায়ুন খাঁর স্ত্রী গৃহবধূ শাহিনুর বেগম (৫০) জানান, সকালে রান্নাবান্না সেরে ঘরে তালা দিয়ে মেয়ের সাথে ভিডিও কলে কথা বলার জন্য পাশের ঘরের জাহাঙ্গীরের বউয়ের কাছে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির লোকজন আমার ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে আগুন, আগুন বলে চিৎকার করে। তাদের চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় লোকজন ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তাদের ১টি ইউনিট দ্রুত এসে ৩০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে গৃহবধূ শাহিনুর আরো বলেন, আমি অনেক কষ্টে জীবনযাপন করতেছি। এই ছোট্ট দোছালা বসতঘরটি ছাড়া আমার আর কোনো বসতঘর নাই। আমি, আমার স্বামী, পুত্রবধূ, ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়েই এই ছোট্ট ঘরেই বসবাস করছিলাম। ঘরটুকু ছাড়া আর কোথাও কোনো জায়গা সম্পত্তি নেই। আজ আমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আমি এনজিওর থেকে টাকা ঋণ করে ঘরের অনেক কাজ করেছি। আমার ঘরে নগদ টাকা, স্বর্ণ অলংকার, ফ্রিজ, বাড়ির জমিনের দলিলপত্র, ঘরের আসবাবপত্রসহ পুরো ঘর পুড়ে ছাই। এতে আমার লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
একই বাড়ির ফারুক খান বলেন, আমরা কমপক্ষে ১৫টি পরিবার এই বাড়িতে বসবাস করি। আমারও ১টি রান্নাঘর পুড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই বাড়ির বাসিন্দা আবু তাহের খান বলেন, আমার বসতঘরটিও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এতে আমার ঘরের বহু মালামাল ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ কামরুল হাসান ও টিম লিডার বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। সেখান থেকে ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার সেই আগুনকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক হয়েছে।