গতকাল রোববার (১০ মার্চ) সৌদিআরবে পবিত্র মাহে রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে।আজ সোমবার (১১ মার্চ) সৌদিআরবসহ মধ্য প্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে রোজা (সিয়াম) শুরু হয়েছে। আর সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের প্রায় ৪০টি গ্রামেও পবিত্র রোজা শুরু করেছেন হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার ও চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারীরা।
জানা গেছে, ১৯২৮ সাল থেকে হাজীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আযহা পালন উদযাপন শুরু করেন। এরপর থেকে চাঁদপুরের প্রায় ৪০ গ্রামের মানুষ রোজা ও আগাম ঈদ পালন করে আসছেন। তবে তারা বলছেন, সৌদিআরব নয়, চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করেই রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, প্রতাপপুর, শমেসপুর, বলাখাল, দক্ষিণ বলাখাল, নিলাম বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলিপুর, উচ্চঙ্গা, বেলচোঁ, সেন্দ্রা, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট।
মতলব উপজেলার মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির কয়েক গ্রামসহ চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল,পটুয়াখালী, বরগুনা, শরীয়তপুর ও চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি স্থানে মাও. ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে রোজা শুরু করেন।
এছাড়াও চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী হিসাবে মতলব উত্তরে পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দি, লতুর্দী, সাতানী ও দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা, আমিয়াপুর, মধ্য ইসলামবাদ, গাজীপুুর, মধ্য এখলাছপুর (বড়ইকান্দি), ফরাজীকান্দি, রামদাশপুর, চরমাছুয়া, হাজিপুর, দক্ষিণ রামপুর, সরকারপাড়া ও ঠাকুরপাড়া অনেকে সৌদিআরবের সাথে রোজা পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা আরও জানান, উল্লেখিত গ্রামের সকল মানুষ কিন্তু হাজীগঞ্জের সাদ্রা ও চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী নয়। যারা অনুসারী, শুধুমাত্র তারাই সৌদিআরবের সাথে রোজা, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালন করেন থাকেন।
এ বিষয়ে সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীরের ছেলে সাহেবজাদা ড. বাকী বিল্লাহ্ মিশকাত চৌধুরী সংবাদকর্মীদের বলেন, সৌদিআরব নয়, কোরআন ও হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে আমরা রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করে থাকি।
উল্লেখ্য, সৌদিআরবে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে সোমবার (১১ মার্চ) থেকে দেশটিতে রোজা শুরু হবে। খবর আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী রোববার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ায় কাল থেকে সৌদিতে রোজা শুরু হচ্ছে। আর চাঁদ দেখা যাওয়ায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার ও চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারীরা রোজা শুরু করেছেন।
হিজরি সন অনুযায়ী রমজান নবমতম মাস। এ মাসে প্রত্যেক মুসল্লি আল্লাহ’র নৈকট্য অর্জন এবং তার হুকুম পালনের জন্য ফজরের নামের আগ থেকে শুরু করে মাগরিবের আযান পর্যন্ত সকল ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন। পবিত্র রমজান মাসে মুসল্লিরা কঠোর নিয়ম কানুন মেনে চলেন এবং এমাসে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত এবং তারাবির নামাজ আদায় করেন। এছাড়া বেশি বেশি দান-সদকা করেন।