১৪ বছর পূর্বে ভালবেসে বাড়ির পাশের শরিফুল ইসলামের(৩৭) সাথে ঘর বেঁধে ছিলেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব হর্ণিদূর্গাপুর গ্রামের সামলা বেগম (৩৪)। তাদের সংসারে দুটি ফুট ফুটে ছেলে রয়েছে। কিন্তু ভালবাসার সংসারে কালোমেঘের ছায়া অদ্যাবদি দুর হয়নি। বরং এখন তা ঘন কালোমেঘ হয়ে কালবৈশাখি ঝড়ের আকার নিয়েছে। মাত্র দুশত গজ দুরে থাকা শশুরবাড়িতে সালমা বেগমের ঠাই হয়নি এখন। ফলে গত ১৪ বছর কখনো বাবার ভিটায়, কখনো স্বামীর কর্মসূত্রে গাজীপুরে বসবাস করছেন। কিন্তু কোন স্থানেই সুখের মুখ দেখেননি সালমা। পরকিয়া আসক্তিই মূল কারণ প্রতিনিয়ত মারধর করা করতো দাবি সালমা বেগমের। গাজীপুরে চাকুরি করাকালিন বেশ কয়েকবার তাকে একেকবার একেক নারীর সাথে পরকিয়ায় যুক্ত থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান। সর্বশেষ গত ৬মাস পূর্ব থেকে শরীফুল ইসলাম সালমার ও সন্তানদের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না। গোপনে তাকে তালাক দিয়ে তাকে তার দুই সন্তানকে নি:স্ব করে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত সে। ঘটনা এমন হলে তার আত্মহত্যা করার ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। যদিও ইতপূর্বে সে আরো একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেও অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে। অপরদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার স্ত্রী সালমা বেগমকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান শরিফুল ইসলাম।
জানা গেছে, পূর্ব হর্ণিদূর্গাপুর গ্রামের নাজির মৃধার মেয়ে সালমা বেগমের সাথে পাশ^বর্তী বাড়ির হারুন অর রশিদের ছেলে শরিফুল ইসলামের প্রেমের সর্ম্পক বিয়েতে গড়ায়। যদিও সালমার পরিবার এই বিয়ে মেনে নিলেও আজ পর্যন্ত শরিফুলের পরিবার তা মেনে না নেয়ায় শশুড় বাড়িতে যাওয়া হয়নি সালমা বেগমের। দুই সন্তান শিশির (১৩) ও সৌরভ(৭) এখন থাকতে পারেনি পাশে থাকা দাদার বাড়িতে।
সালমা বেগম জানায়, বিয়ের পর থেতে তিনি আজ পর্যন্ত শশুড় বাড়িতে যেতে পারেন নি। তার স্বামী অসুস্থ হয়ে কয়েক বছর কর্মবিহীন ছিলেন। এসময় বিভিন্ন এনজিও ও ব্যক্তি থেকে ঋণ নিয়ে তার স্বামী চিকিৎসা করেছেন। যা তিনি এখনো বহন করছেন। ভাইদের সহায়তায় কয়েকদফা গাজীপুরে একটি গার্মেন্টেসে চাকুরির ব্যবস্থা করে দিলেও সেখানে তার স্বামী অন্য নারীদের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে। সর্বশেষ ৬ মাস পূর্বে এরকম একটি ঘটনার পর শরিফুল ইসলাম তাদেরকে চাঁদপুর ল ঘাটে রেখে চলে যায়। এর থেকে তাদের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। শুনেছেন তাকে তালাক দেয়ার পাঁয়তারা করছে শরিফুল। ইতিপূর্বে স্বামীর মারধরের কারণে তার গর্ভস্থ আরেকটি সন্তান জন্মের পর রক্তশূণ্যতার কারণে মারা যায়।
সালমা বেগমের ১৩ বছরের ছেলে শিশির জানায়, তার বাবা তাদের কোন খোঁজ নেয় না। আগে মাকে প্রায়ই মারধর করতো।
সালমার চাচাতো ভাই রাজিব মৃধা বলেন, শরিফুল ও তার পরিবার সালমাকে আজ পর্যন্ত শান্তি দেয়নি। শরিফুল ইতিপূর্বে কয়েকবার পরকিয়ার কারণে ধরা পরে। আমার বোন ও তার দুটি সন্তানের এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যত।
শরিফুল ইসলামের পিতা হারুন অর রশিদ জানান, শরিফুলকে ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেও লজ্জ¦া বোধ হয়। তাকে আলেম বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আচরণ জালেমের মতো হয়ে গেছে।
মুঠো ফোনে শরিফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সালমাকে তিনি তালাক দিয়েছেন। এছাড়া দুই সন্তানেরও কোন খোঁজ খবর ও ভরণপোষণ দেননা।