অনলাইন ডেস্ক :
শ্বশুরবাড়ি ও স্ত্রীর অত্যাচার সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বাংলাদেশ ও মার্কিন নাগরিক শেখ সোয়েব সাজ্জাদ (৪৪)। এমন অভিযোগ করেছেন সাজ্জাদের পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনাটি ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসেও জানানো হয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল শ্বশুরবাড়িতে আত্মহত্যা করেন মার্কিন নাগরিক শেখ সোয়েব সাজ্জাদ। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক সাজ্জাদের স্ত্রী সাবরিনাসহ নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবি করেছেন নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই শেখ সোহেল সায়াদ আহমেদের অভিযোগ করে বলেন, তাকে এমন মানসিক অত্যাচারে রাখতো যে সে কখনও মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতে পারতো না। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর সাজ্জাদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিল স্ত্রী সাবরিনা। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন-টাকা রেখে দেওয়া হয়। পাসপোর্ট ও টাকা-পয়সা হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন সাজ্জাদ। বারবার পাসপোর্ট ও মোবাইল ফেরত চেয়েও পাননি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, স্ত্রী সাবরিনা ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচারে আত্মহননের পথ বেছে নেন সাজ্জাদ। এ মামলায় সাজ্জাদের স্ত্রী সাবরিনা শারমিন (৩০) এবং স্ত্রীর প্রেমিক কাজী ফাহাদকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মার্কিন নাগরিক সাজ্জাদের মৃত্যুর ঘটনাটি ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালে সাবরিনা শারমিনের সঙ্গে আমেরিকান নাগরিক শেখ সোয়েব সাজ্জাদের বিয়ে হয়। এরপর আমেরিকাতে তারা বসবাস করছিলেন। ২০১৮ সালের মে মাসে সাজ্জাদকে রেখে সাবরিনা বাংলাদেশে চলে আসেন। এরপর রাজধানীর ওয়ারীর ১৯/১ ওয়ারস্ট্রীট রোডের বাসার পঞ্চম তলায় ভাড়া থাকেন। পাশের বাসার কাজী ফাহাদ নামে এক ছেলের সঙ্গে সাবরিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাবরিনার প্রেমিক ফাহাদ সবসময় সাবরিনার বাসায় যাতায়াত করতেন।
এ নিয়ে সাজ্জাদের সঙ্গে সাবরিনার ফোনে কথা কাটাকাটি হয় এবং মনোমালিন্য হয়। একই বাসার নিচতলায় সাজ্জাদের ভাই, বাবা ও মা থাকতেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে সাবরিনার যোগাযোগ ছিল না। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা পছন্দ করতেন না সাবরিনা। গত ১৬ মার্চ সাজ্জাদ আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসেন। এরপর স্ত্রী সাবরিনাকে সঙ্গে নিয়ে বনানী ডিওএইচএস মসজিদ রোডের ১০৫ নম্বর বাসার তৃতীয় তলায় শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন। শ্বশুরবাড়িতে ওঠার পরপরই সাজ্জাদের ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। জানা গেছে, দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান শেখ সোয়েব সাজ্জাদ, নাগরিকত্বও নেন দেশটির। আর বনানী ডিওএইচএস-এর একটি বাসা থেকে সোয়েব সাজ্জাদের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয় গত ৩০ এপ্রিল। এ ব্যাপারে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা দায়ের করে সাজ্জাদের পরিবার।
ক্যান্টনমেন্ট জোনের এডিসি ইফতেখাইরুল ইসলাম জানান, মামলার যে দ্বিতীয় আসামি কাজী ফাহাদ আমরা তাকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছি। তার পাঁচ দিনের রিমান্ডও চেয়েছিলাম। আদালত জেল গেটে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। সেই আদেশের কপিটি আসার পর আমরা অভিযোগকারীদের সাথে কথা বলব। আর এ মামলার আরেকজন আসামি রয়েছে তাকেও গ্রেফতার করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।