চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নে এক প্রবাসীর ৩০ বছরের খরিদকৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক রাতের আধারে দখলের অভিযোগ পাওয়া যায়। ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের অবস্থান দেখে স্থাপনা রেখেই পালিয়ে যায় ভূমিদ্যুরা। এর পরই প্রবাস ফেরত খায়রুজ্জামান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জ ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে বাকিলা ইউনিয়নের স্বর্ণা গ্রামে ঘটেছে।
সরেজমিন তদন্তে ও লিখিত অভিযোগ সৃত্রে জানাযায়, বাকিলা ইউনিয়নের ছয়ছিলা গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে বৃদ্ধ মো. খায়রুজ্জামান স্বর্ণা এলাকার জনৈক অভিনয় চন্দ্র লোধ থেকে প্রবাস থাকাকালীন ১৯৮৫ সালে ৭৫৬৪ দলিল মূলে ১৯৫/৩৮ নং সন্না মৌজা ২৩৬৯ দাগে ৩৫ শতাংশ ভূমি ও পরবর্তী বছর একই মৌজায় ২৩৭০ দাগে ১৭ শতাংশ ভূমি খরিদসৃত্রে মালিকানা লাভ করেন। সর্বমোট ৫২ শতাংশ ভূমি নিজ নামজারী খারিজ করে প্রায় ৩০ বছর ধরে ভোগ দখল করিয়া আসিতেছে। পুরো ৫২ শতাংশ ভূমি বাকিলা ফকির বাজার সড়কের পাশে হওয়ায় দেওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে দখলে রেখেছেন।
দেশের রাজনৈতিক পেক্ষাপট পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু ভূমিদস্যু মাথা ছাড়া দিয়ে উঠে। হঠাৎ করেই অভিযুক্ত সন্না খলাপাড়া এলাকার আ. ছাত্তার মিজির ছেলে মো. হানিফ মিজি (৪০), আ. মান্নান মিয়ার ছেলে শফিকুর রহমান (৪৮)সহ ৮/১০ জন মিলে রড, লোহার শাবল, কোদাল ও মোটা লাঠিসোঠাসহ দেশীয় ধারালো অস্রসস্ত্র নিয়ে গত ৯ অক্টোবর বুধবার প্রবাস ফেরত খায়রুজ্জামানের দেওয়াল ভাংচুর চালায়। দেওয়ালের ইট খুলে ফেলে এবং একাধিক ছোট বড় গাছ নিধন করে। তাদেরকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে গালমন্দ শুরু করে এবং বেশি ভাড়াবাড়ি করিলে খায়রুজ্জামান ও তার পরিবারকে খুন ও গুমের ভয় ভীতি হুমকি প্রদান করে। তাদের এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দেখে স্থানীয় সচেতনমহল ডাক দিলে তারা তাদেরকেউ ভয় দেখিয়ে চলে যায়।
দফায় দফায় প্রবাস ফেরত খায়রুজ্জামানের দখলকৃত সম্পত্তির উপর হামলার বিষয়ে প্রতিপক্ষ হানিফ মিজির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখানে আমরা ২১ শতাংশ জায়গা পাই। একই দাগে আমরা রানী প্রভা নামে জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করেছি। তিনি যেই ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন আমরা সেই ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করিনি। এ জন্য আমরা ১৪৫ ধারায় আদালতে নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করেছি।
সেই দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে খায়রুজ্জামানের দখলকৃত দেওয়াল ভেঙ্গে তারা সেখানে একটি টিনসেট অস্থায়ী ঘর স্থাপন করেছে।
কিন্তু সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে জানাযায়, হিন্দু আইনে বোনদের কাছ থেকে কোন সম্পত্তি ক্রয় করলে তা অবৈধ। তাহলে রানী প্রভার কাছ থেকে তাদের এ সম্পত্তি কেনা সঠিক হয়নি দাবি করেন খায়রুজ্জামান। এ জন্য তিনিও চাঁদপুর আদালতে এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা মাও আবু তাহের, হারুনুর রশিদ ও মানিক হোসেন বলেন, আমরা গত প্রায় ৩০ বছর ধরে দেখে আসছি এ সম্পত্তি খায়রুজ্জামানের ভোগ দখলে। যেখানে এক পাশে বাড়ী আর বাকি খালি অংশে গাছপালা লাগিয়ে চারপাশ দেওয়াল দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে হানিফ মিজি ও শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাতের বেলায় দেওয়াল ভেঙ্গে ঘর উঠিয়েছে।
প্রবাস ফেরত খায়রুজ্জামান ও তার পরিবার বলেন, আমি ভূমিদ্যুদের ভয়ে কোথাও বের হতে পারছি না। তাদের বিরুদ্ধে কোর্ট, উপজেলা ও থানায় মামলা দিয়েছি। আমরা এখন নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতেছি তাই প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, সম্পত্তিগত বিরোধ মূলত আদালতে সঠিক সমাধান, তার পরেও আমার এখানে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।