Header Border

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
শিরোনাম
হাজীগঞ্জে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ  মতলব উত্তরে এস ই এল মডেল একাডেমিতে বার্ষিক ক্রীড়া সাংস্কৃতিক ও মেধাবৃত্তি পুরস্কার বিতরণ   হাজীগঞ্জে ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ও ৯ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত মতলব উত্তরে কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা সম্পন্ন হাজীগঞ্জে মাসব্যাপী তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ কচুয়া পৌর বিএনপির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভা মতলব উত্তরে ৩৮ শতাংশ টিউবওয়েলে আর্সেনিক!  মতলব উত্তরে কালীপুর লঞ্চঘাটের পন্টুনে ওঠার খুঁটি ভাঙা ; লঞ্চে উঠতে যাত্রীদের ভোগান্তি হাজীগঞ্জে সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ ইয়ং ফাইটার্স ক্লাবের খেলোয়াড়দের ট্রাকস্যুট ও জার্সি প্রদান

বিলুপ্তির পথে দৃষ্টিনন্দন ঢোলকলমি গাছ

দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহনসহ দক্ষিণাঞ্চলের খাল, বিল, রাস্তার পাশে আর দেখা মিলছে না ঢোলকলমি বা গ্রাম্য ভাষায় বেদমা গাছ। বেদমা গাছ বা ঢোলকলমি, বেড়ালতা বা বেড়াগাছ নামেও পরিচিত। দেশের সব এলাকার রাস্তার ধারে, বাড়ির পাশে, মাঠে-ঘাটে, জলাশয়ের ধারে, খাল-বিলের ধারে সর্বত্রই চোখে পড়ে।গ্রামে অবহেলায় বেড়ে ওঠা আগাছা হিসেবে পরিচিত বেড়ালতা বা ঢোলকলমি।

ঢোলকলমি গুল্ম প্রজাতির উদ্ভিদ। এর কা- দিয়ে কাগজ তৈরি করা যায়। সবুজ পাতার গাছটি ৬ থেকে ১০ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে।অযতেœ অবহেলায় জন্ম নেয়া ঢোলকলমি বা বেদমা গাছের ফুল যে কোনো বয়সী মানুষের নজর কাড়বে।

পাঁচটি হালকা বেগুনি পাপড়ির ফুল দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। সারা বছরই ঢোলকলমির ফুল ফোটে। তবে বর্ষার শেষে শরৎ থেকে শীতে ঢোলকলমি ফুল বেশি দেখা যায়। একটি মঞ্জরিতে চার থেকে আটটি ফুল থাকে।

ফুলে মধুর জন্য কালো ভোমরা আসে।এ গাছ অল্পদিনের মধ্যেই ঘন ঝাড়ে পরিণত হয়। এ গাছ জমির ক্ষয়রোধ করে ও সুন্দর ফুল দেয়। দেশের গ্রামাঞ্চলে এই গাছ জমির বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেকে আবার জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করে।

নদীর তীরে কিংবা বিশাল ফসলের মাঠে ঢোল কলমি জন্মে পাখির বসার জায়গা করে দেয়। এ গাছে বসে পাখি পোকামাকড় খায়।ঢোলকলমি ফুলের মধু সংগ্রহ করতে কালো ভোমরার আনাগোনা দেখা যায়। গ্রামের শিশুরা ঢোলকলমির ফুল দিয়ে খেলা করে।

এক সময় ভোলার দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামের অধিকংশ পরিবার ফসলের ক্ষেত, পুকুর ও বসতবাড়ির চারপাশে বেড়ার প্রধান উপকরণ হিসেবে এই ঢোলকলমি ব্যবহার করতেন। কেউ কেউ কলমি গাছের সাথে নেট ও বাঁশের চটা ব্যবহার করে বেড়াকে শক্তিশালী করছে।

অনেকে এ গাছের অতিরিক্ত অংশ রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।ঢোলকলমির বীজ ও পাতায় বিষাক্ত উপাদান থাকে। তেতো স্বাদের সাদা কষ থাকায় এর পাতা গরু-ছাগলে খায় না। তাই বেড়া হিসেবে এটা ব্যবহারের চাহিদা বেশি। ঢোলকলমি খরা ও বন্যায় সহনীয় বলে প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে।

আরো পড়ুন  ছেংগারচর বাজারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া

সহজেই মারা যায় না, খাল বিল ডোবা ও খোলামেলা পরিবেশে বংশবৃদ্ধি করে। কীটপতঙ্গভুক পাখি ঢোলকলমির ডালে বসে পোকা ধরে খায়।নব্বইয়ের দশকে পোকার ভয়ে এ গাছ ধ্বংস করার একটা হিড়িক পড়ে গিয়েছিল।

দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ঢোলকলমি গাছে থাকা এক ধরনের পোকা। গুজব রটে যায়, এই পোকা এতটাই ভয়ংকর যে, কামড় দিলে মৃত্যু অবধারিত, এমনকি স্পর্শ লাগলেও জীবন বিপন্ন হতে পারে।

এসব খবর রেডিও, টিভি, পত্রিকায় মহামারীর মৃত্যুর খবরের মতো কবে ক’জন মরল, ক’জন হাসপাতালে গেল – সেরকমভাবে প্রচারিত হয়েছিল মাসজুড়ে। সারাদেশে সাধারণ মানুষ গণহারে, এমনকি স্থানীয় প্রশাসনও ঢোলকলমি গাছ কেটে সাবার করেছিল।

এই বিদঘুটে নামের পোকাটি যে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলো আমাদের এই দেশে, তার জুড়ি মেলা ভার!শুধু গ্রামে না, ঢোলকলমি পোকার আতঙ্ক ছড়িয়েছিলো খোদ রাজধানী ঢাকাতেও। এটা না কি খুব বিষাক্ত এক পোকা, যার সংস্পর্শে আসলেই নির্ঘাৎ মৃত্যু।

আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলো যে, ছোট-বড় সবাই তটস্ত থাকতো কখন কী ঘটে যায় !আতঙ্ক যখন চরম পর্যায়ে তখন টিভিতে একজন বিশেষজ্ঞ পোকাটি ধরে এনে নিজের হাতের উপর ছেড়ে দিয়ে হাঁটিয়ে, তারপর হাত দিয়ে পিষে মেরে দেখিয়ে প্রমাণ করেছিলেন যে, এটি আসলে খুবই নিরীহ একটি কীট, মোটেও প্রাণসংহারী নয়।

এরপর থেকেই আতঙ্ক কেটে যায়।ঢোলকলমি আতঙ্ক, গুজব ও মিডিয়ার ভূমিকা এখন ইতিহসের শিক্ষার বিষয়।নদীতীর, খালপাড়ের মাটিকে শক্ত করে ধরে রাখা, ভূমিক্ষয় রোধ, ভাঙনরোধে ঢোলকলমি গাছের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

ঢোলকলমি ফুল সারা বছরই ফোটে। তবে বর্ষার শেষ ভাগ থেকে শরৎ-শীতে প্রস্ফুটনের জোয়ার থাকে বেশি। একটি মঞ্জরিতে ৪-৮টি ফুল থাকে। ফানেলাকার আকৃতির ফুল। পাঁচটি হালকা বেগুনি বা হালকা গোলাপি পাপড়ি।

ফুলে মধুর জন্য কালো ভোমরা আসে।লালমোহন উপজেলার পূর্ব চরউমেদ গ্রামের গৃহস্থ আবুল কালাম বলেন, এটা খুবই উপকারী গাছ। এই ঢোলকলমির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল গরু ছাগলে না খাওয়ায় এটা বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

আরো পড়ুন  নিজের দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী 

নদীতীর ভাঙন রক্ষা করে। অনেক সময় রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হয়।বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাকৃতিক বেড়া হিসেবে পরিচিত, সুন্দর ফুলের সমারোহে ভরা এই ঢোলকলমি বা বেদমা গাছ। প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় মূল্যবান এই উদ্ভিদকে সংরক্ষণের ও সম্প্রসারণের জন্য সকলের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

 

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

হাজীগঞ্জে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ 
মতলব উত্তরে এস ই এল মডেল একাডেমিতে বার্ষিক ক্রীড়া সাংস্কৃতিক ও মেধাবৃত্তি পুরস্কার বিতরণ  
হাজীগঞ্জে ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ও ৯ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
মতলব উত্তরে কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা সম্পন্ন
হাজীগঞ্জে মাসব্যাপী তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ
কচুয়া পৌর বিএনপির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভা

আরও খবর

error: Content is protected !!