মাসুদ মজুমদার হাজীগঞ্জ বাজারস্থ মাম ফুডস্ এর সত্ত্বাধীকারী। প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে জানান, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাতে মাম ফুডস থেকে সাবেক মেয়রের ভাই বাদল খাঁনসহ অজ্ঞাতনামা লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর সাবেক মেয়রের মালিকানাধীন সাত্ত্বনা মার্কেটে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে সাবেক মেয়র ও তার ভাইসহ অজ্ঞাত লোকেরা মারধর করে।
এসময় মাসুদ মজুমদারের দোকান মাম ফুডস্ ভাংচুর, মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট করে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি করে। খবর পেয়ে পুলিশ ওইদিন রাতে সান্ত্বণা মার্কেট থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই দিন রাতেই তিনি সাবেক মেয়র আলহাজ¦ আব্দুল মান্নান খাঁন বাচ্চু ও তার ভাই বাদল খাঁনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে বিবাদী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক মেয়র আলহাজ¦ আব্দুল মান্নান খাঁন বাচ্চু বলেন, গত ৮ বছর ধরে আমি তার (মাসুম মজুমদার) কাছ থেকে ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাই। সে দেই-দিচ্ছি বলে দীর্ঘদিন কালক্ষেপন করে যাচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) রাতে আমার ভাই তাকে খবর দিয়ে আমার কাছে নিয়ে আসে। এসময় সে উল্টাপাল্টা কথা বললে আমার ভাইয়ের সাথে তার ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে সে মারমুখি হলে আমরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেই।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন কোন (মারধর কিংবা মারামারি) অভিযোগ নেই। আর আদালতের মামলার বিষয়ে আইনি ভাবে মোকাবেলা করা হবে।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ মজুমদার বলেন, আমি সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নান খান বাচ্চুর ভাড়াটিয়া ছিলাম। তিনি ২০২২ সালে কোন নোটিশ ছাড়াই আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে ১৫ লাখ টাকার মালামাল ধ্বংস করে। তখনও আমি তার নিয়মিত ভাড়াটিয়া এবং তার কাছে আমার অগ্রিম ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা জামানত ছিলো।
আমার মালামাল ধ্বংস এবং ব্যবসায়ীকভাবে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণে বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক দেন-দরবার করি, কিন্তু তিনি আমার জামানত ও ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করায় ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘদিন হাজিরা না দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন। একপর্যায়ে আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করলে তিনি গত ২/৩ মাস মাস ধরে মামলাটি মুভ করছেন।
এরমধ্যে মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নান খাঁন বাচ্চু আমাকে চাপ-সৃষ্টি করতে থাকেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার রাতে তার ভাই বাদল খাঁনসহ অজ্ঞাতনামা লোকজনকে নিয়ে আমার দোকানে আসে। তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আমার দোকান ভাংচুর, মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট এবং আমাকে মারধর করে। পরে তারা আমাকে জোরপূর্বক সাবেক মেয়রের মালিকানাধীন সান্ত্বনা মার্কেটে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সান্ত্বনা মার্কেটে নিয়ে আব্দুল মান্নান খাঁন বাচ্চু ও তার ভাই বাদল খাঁনসহ অজ্ঞাতনামা লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে মারধর করে। জানিনা, কিভাবে খবর পেয়ে পুলিশ আমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আলীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এসময় আমি প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় এসে একটি অভিযোগ দায়ের করি। তবে ওই অভিযোগে অনেক কিছু লিখতে পারিনি। যার কারণ বলতে পারবোনা।
মাসুদ মজুমদার বলেন, বিস্তারিত আমি আদালতে বলবো এবং সাবেক মেয়র আলহাজ¦ আব্দুল মান্নান খাঁন ও তার ভাই বাদল খাঁনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতেই অভিযোগ দায়ের করবো। এখন আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ন্যায়-বিচার প্রত্যাশা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু মাহমুদ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্, কার্যকরি সদস্য মহিউদ্দিন আল আজাদ, মেহেদী হাসান সর্দার, এনায়েত মজুমদার, সাইফুল ইসলাম সিফাত, সদস্য শাখাওয়াত হোসেন শামীম, সাংবাদিক কল্যান সমিতির অর্থ সম্পাদক জাহিদ হাসান, সদস্য জহির আহমেদ, নুর মোহাম্মদ, রিমেল ও রিয়াজ শাওনসহ অন্যান্য সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।