নূরুল ইসলাম ফরহাদ:
মাসখানেক পরই ধানের শীষ বের হতো। কিন্তু তার আগেই ধান গাছের চারা কেটে ফেলেছে ইজারাদার। ফরিদগঞ্জ পৌরসভার চরমথুরার চরে ঘটেছে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি।
ঘটনার বিবরণ এবং থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রের মাধ্যমে জানা যায়, চরমথুরার চর প্রতিবছরের মতো এবারও টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইজাড়া দেওয়া হয়। এবছর ডাক পেয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী বকুল। এদিকে প্রতিবছরই শুকনা মৌসুমে এ চরে কৃষকরা ধান চাষ করে। আর বর্ষাকালে মাছ চাষ করা হয়। এ বছরও কৃষকরা ধান চাষ করেছে। ধানের শিষ বের হলো বলে, এমনই সময় বকুল চরে পানি ছেড়ে দেয় এবং পনের শতক জমির ধানের চারা কেটে ফেলে। ঘটনাটি ঘটে গত ১০ থেকে ১২ দিন পূর্বে। এ নিয়ে বকুলের সাথে কৃষকদের বিরোধ বাঁধে। কৃষকদের পক্ষ হয়ে মো. রবিউল গত ২৮ ফেব্রæয়ারি মঙ্গলবার রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কৃষক মো. রুবেল হোসেন, মো. তোফাজ্জল বেপারী, মো. জাহেদ বেপারীসহ আরো অনেকেই এ প্রতিনিধিকে জানান, ‘আমরা চরে ধান লাগিয়েছি। চরে সবসময়ই ধানের ভালো ফলন হয়। এবারও ভালো ফলন হওয়ার আশা ছিল। কিন্তু চর কমিটি আমাদের সাথে অন্যায় করেছে। ধান আসার পূর্বেই চর ইজারা দিয়ে দেয় তারা। ইজারাদার আমাদের না জানিয়ে চরে পানি ও মাছ ছেড়ে দেয়। এবং ইজারাদার ৭ জন লোক লাগিয়ে আমাদের ধান কেটে ফেলেছে। আমরা তার বিচার চাই।
এ বিষয়ে ইজারাদার বকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমি ১২ মাসের জন্য এই চরটি প্রায় ২১ লক্ষ টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি। নদীতে পানি এসেছে তাই আমি চরে পানি দিয়ে মাছ চেড়েছি। এখন চর কমিটি যদি ধান রাখতে চায় তাহলে আমার ক্ষতিপুরন কে দিবে?’ ধান কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দুইজন লোক গতকাল কিছু ধান কেটেছে।’
এ বিষয়ে চর কমিটির সভাপতি মোবারক মেম্বার জানান, ‘আমরা প্রতিবছর এ চরে ধানের দামসহ ইজারা দিয়ে থাকি। কিন্তু এবার আমাদের না জানিয়ে কয়েকজন কৃষক চরে ধান লাগিয়েছে। আমি তাদে নিষেদ করেছি। এখন যেহেতু একটি সমস্যা হয়েছে তা সমাধান করবো।
এ বিষয়ে এ.এস.আই আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ধান কাটার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ধান উৎপাদনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করবো।’