খন্দকার আরিফ:
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের রাজারগাঁও বাজারে দেলোয়ার হোসেন মৌলভী নামীয় ব্যক্তি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ব্যতিরেকে রিয়াজ রাইস মিল পরিচালনা করে আসছেন। তিনি বেশ কয়েকটি মেশিন বসিয়ে ধান, হলুদ, মরিচ ভাঙ্গানোর ব্যবসা করছেন। তিনি ব্যবসা চলমান রাখলেও সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না! এই দেলোয়ার মৌলভী যেন নিজকে নিজে সর্বাঙ্গে সর্বা মনে করছেন। এ জন্য দেলোয়ার সরকারী নিয়ম না মেনে দীর্ঘদিন চালিয়েছেন শব্দ দূষনকৃত ব্যবসা। তার এই প্রতিষ্ঠান ৩ মাস পূর্বে ভ্রাম্যমান আদালতে বন্ধ করা হয়। তাকে করায় হয় অর্থদণ্ড। এরপরও দেলোয়ার মৌলভী ভ্রাম্যমান আদালতে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার পাঁয়তারা করছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, শব্দ দূষনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ১৪ জুন রাজারগাঁও বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তার লিখিত অভিযোগের আলোকে সহকারী পরিচালক নাজিম হোসেন শেখ দেলোয়ার মৌলভীকে শুনানীতে অংশ নিতে ৩টি নোটিশ জারি করেন। এ কর্মকর্তার নোটিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেলোয়ার বীরদর্পে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হওয়া প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যান। ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর সহকারী পরিচালক পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহন ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা ও শব্দ দূষণের মাধ্যমে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করায় প্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ প্রদান করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম হোসেন শেখ তার লিখিত নোটিশে উল্লেখ করেন শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ এর ৭ ধারা অনুযায়ী শব্দদূষণ দন্ডনীয় অপরাধ। মিলটি কার্যক্রমের মাধ্যমে শব্দদূষণ করায় এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহন ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করায় অবিলম্বে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে প্রতিষ্ঠান মালিক দেলোয়ার মৌলভীকে নির্দেশ দেন। এমন নির্দেশনার পর এই দেলোয়ার মৌলভী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর মাজহারুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের নিকট আরো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্ত দেলোয়ারকে ২০ হাজার অর্থদণ্ড করেন। এসব কিছু হওয়ার পরও দেলোয়ার মৌলভী কোন অন্দরমহলের ইঙ্গিতে প্রতিষ্ঠানটি চালু করার পাঁয়তারা করছেন?
দেলোয়ার হোসেন মৌলভীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি পুনরায় মিলটি চালু করলেও পরে প্রশাসনের নির্দেশে মিলটি বন্ধ করে দেই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাছান মানিক মুঠোফোনে বলেন, বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান চালু করা যাবেনা। কিছু দিন পূর্বে প্রতিষ্ঠান মালিক দেলোয়ার মৌলভী মিলটি চালু করলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনটি পুনরায় করলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।