শাখাওয়াত হোসেন শামীম, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) সংবাদদাতা ll
পুকুর আছে, পাড় নাই। বছর না যেতেই কোটি টাকার রাস্তা ধ্বসে পড়ছে পুকুরের পানিতে। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে গ্রামীণ জনপদের রাস্তার ধারে গড়ে উঠা পুকুরগুলোর কারণে রাস্তার এরকম ভেঙে পড়ার চিত্র সবখানেই চোখে পড়ে।কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব রাস্তা বা সড়ক অল্প দিনের মধ্যেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ফলে সরকারের প্রতিবছর রাস্তা মেরামতে কোটি কোটি টাকা জলে পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা তৈরি করে। কিছুদিন না যেতেই এসব রাস্তা গিলে ফেলে পুকুরে। অল্প অল্প করে ভাঙতে ভাঙতে একসময় পুরো রাস্তায় বিলীন হয়ে যায় পুকুরে। এতে পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বছরের পর বছর এসব ভাঙা রাস্তা আর মেরামত হয় না। পুুকুরধারে রাস্তা ভাঙনের জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ফলে অবাধে গড়ে উঠা পাড় বিহীন পুকুরগুলোর কারণে একদিকে জনদুর্ভোগ বাড়ে অন্যদিকে সরকারের অপচয় হয় কোটি কোটি টাকা।
উপজেলার ৮ নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের টংগীরপাড় গ্রামের মৎস্য চাষি জামাল প্রধানিয়া
বলেন, আমি এখানে ফসলের মাঠে পানি আটকিয়ে মাছের পজেক্ট করেছি আপনাদের সমস্যা কি, আমি এখানে মাছ চাষ করবো, আপনারা পারলে কিছু করেন, রাস্তা যদি ভাঙে যায় আমি মেরামত করে দিবো।
হাজীগঞ্জ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়ন রয়েছে। পৌরসভা ও ইউনিয়ন মিলে রয়েছে ১৫৭টি গ্রাম।
প্রত্যেকটি গ্রামীণ এলাকায় রাস্তার ধারে রয়েছে অসংখ্য পুকুর ও মাছের পজেক্ট। ছোট বড় পুকুর ও ফসলের মাঠে পানি আটকিয়ে মাছের পজেক্ট মিলে রাস্তাকে পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে মাছের পজেক্টের পুকুর মালিকরা রাস্তা বা রাস্তাটি পুকুর পাড় হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বছরের পর বছর মাছ চাষ করার কারণে পুকুর পাড় হিসেবে ব্যবহৃত সরকারি রাস্তা গুলো ভেঙে পড়ছে। রাস্তা গুলো অতি অল্প সময়ে ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রেজওয়ানুর রহমান জানান, আমরা সরকারী টাকায় রাস্তা গুলো তৈরি করি। অথচ সেই রাস্তা কিছু দিন না যেতেই পুকুরে ধসে পড়ে। রাস্তার ধারে পাড় বিহীন পুকুর বিষয়ে উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে আমি একাধিকবার কথা বলেছি। এছাড়াও পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তবে পুকুর মালিকরা কথা শোনে না। পুকুর মালিকদের সচেতনতা প্রয়োজন। ব্যাক্তিগত পুকুরের জন্য সরকারী সম্পদ নষ্ট করা আইনগত অপরাধ।