Header Border

ঢাকা, রবিবার, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
শিরোনাম
শাহরাস্তির বলশীদে বার্ষিক ইছালে ছওয়াব ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত। শাহরাস্তির হাটপাড় প্রিমিয়ার লীগ (HPL) সিজন-১লং পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন ফরিদগঞ্জে ফারিসা’র নয়া কমিটি সভাপতি মোতাহার হোসেন, সম্পাদক মহেশ শর্মা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আজহারুল হক মুকুলের নেতৃত্বে মতলব উত্তরে ৩১ দফার রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লিফলেট বিতরণ মতলব উত্তরের চরমাছুয়ায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ দেশ বদলাতে গিয়ে আমরা যাতে আগের অবস্থায় ফিরে না যাই: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি বন্ধ করতে হবে: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও পদে পদোন্নতি পেলেন ডাঃ মোঃ জাহিদ ফরিদগঞ্জে ইংলিশ ডোরের উদ্বোধন তারুণ্যের উৎসবে অতিথির সারিতে ওলামালীগের সভাপতি, স্থান হয়নি বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দের 

পরকীয়া প্রেমের জেরে লঞ্চে নারী খুন, হাজীগঞ্জের দেলোয়ারকে ৪ বছর পর গ্রেফতার

২০১৯ সালের ১৬ জুন সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর সদরঘাটে মিতালী-৭ লঞ্চের এস-৩০৯ নম্বর কেবিনে এক নারীর লাশ দেখতে পায় কেবিন বয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ওই নারীর ভাই মনির হোসেন লিলুফা বেগমের পরিচয় শনাক্ত করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
লঞ্চের বুকিং রেজিষ্টারে লিলুফা বেগমের (৫৭) নামের পাশে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হোসেনের মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। যার ফলে তাকে আসামি করে করা হয়। পুলিশ একমাস তদন্ত করে। কিন্তু তদন্তে জাহাঙ্গীর হোসেনের কোন সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়নি। যার ফলে ওই বছরের ১৮ জুলাই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর এস.আই সালেহ ইমরানও জাহাঙ্গীরের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন মর্মে প্রমাণ হওয়ায় অন্যভাবে তদন্ত করলে লিলুফার সঙ্গে একই গ্রামের ব্রুনাই প্রবাসী দেলোয়ার মিজির পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর তিনি নতুন করে তদন্ত শুরু করেন।
অবশেষে এক ফোন কল ও ভয়েস রেকর্ডে লিলুফার হত্যাকারী হিসাবে মো. দেলোয়ার মিজির সংশ্লিষ্টতা পায় পিবিআই। এরপর বিষয়টি ইমিগ্রেশন পুলিশকে অবহিত করে পিবিআই। পরবর্তীতে গত ২২ সেপ্টেম্বর দেলোয়ার মিয়াজী দেশে আসা মাত্রই ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তাঁকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
মো. দেলোয়ার মিজিকে (৪৪) চার বছর তিন মাস পর ব্রুনাই থেকে দেশে আসেন। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের নাসিরকোর্ট গ্রামের মোল্লা বাড়ির মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ডে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে আদালতে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান, পিবিআই’র প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।
তিনি বলেন, পূর্ব পরিচয়ে লিলুফার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় দেলোয়ার মিজির। একপর্যায়ে লিলুফা বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিছুদিন যাওয়ার পর বিয়ের কথা বলে লিলুফা বেগমকে নিয়ে চাঁদপুর থেকে লঞ্চে ঢাকায় রওনা হন দেলোয়ার। লঞ্চে তাঁদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দেলোয়ার লিলুফাকে হত্যা করেন। এতেই থামেননি তিনি, প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে লঞ্চের বুকিং রেজিস্টারে জাহাঙ্গীরের নাম দিয়ে লিলুফার মুঠোফোন নম্বর লিখে দেন।
খুন করার ১০ দিনের মাথায় ২০১৯ সালের ২৬ জুন পালিয়ে ব্রুনাই চলে যান দেলোয়ার মিজি এবং খুনের চার বছর পর বিদেশে বসে লিলুফা হত্যা মামলার অগ্রগতি জানতে ভাগনেকে ফোন করেন তিনি। সেই কথোপকথনের সূত্র ধরে রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়। অবশেষে চার বছর ৩ মাস অপেক্ষার পর গত ২২ সেপ্টেম্বর ব্রুনাই থেকে ফিরলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার আরো বলেন, গ্রেপ্তারের পর দেলোয়ার হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের একটি ভয়েস রেকর্ডে তার সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি তুলে ধরলে মুখ খুলতে শুরু করেন দেলোয়ার। পরে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে দেলোয়ার মিজি বলেন, ২০১২ সালের লিলুফার বাড়িতে কাঠমিস্ত্রীর কাজের সুবাদে তার পরিচয় হয়। লিলুফা স্বামী মৃত মোজাম্মেল হক প্রবাসী ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি মারা যান। বাড়িতে তিনি মেয়েকে নিয়ে একাই থাকতেন। এই সুযোগে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। দেলোয়ার ২০১৭ সালে ব্রুনাই যান। প্রবাসে বসেও ভিডিও কলের মাধ্যমে চলত যোগাযোগ। ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল ২ মাসের ছুটিতে দেশে আসে দেলোয়ার।
দেশে আসার পর তিনি লিলুফার সঙ্গে একাধিকবার দেখা-সাাৎ করেন। এই সময়ে লিলুফা বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু দেলোয়ার সময়পেন করতে থাকলে লিলুফা তার বাড়িতে গিয়ে উঠবে বলে হুমকি দেন। এমন কি দেলোয়ারে বড় মেয়ের বিয়ের আয়োজন গিয়ে সব জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়ায় লিলুফাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ঘাতক প্রেমিক। লিলুফা ১৩ বছরের বড় হওয়ায় দেলোয়ার বিয়েতে আগ্রহী ছিলো না।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৬ জুন রাতে বিয়ের জন্য ঢাকায় আসার প্রস্তাব দেন। দেলোয়ার নিজেকে আড়াল করতে মিতালি-৭ লঞ্চে প্রতিবেশী মুদি দোকানদার জাহাঙ্গীরের নাম, লিলুফার মোবাইল নম্বর লিখে একটি কেবিন বুকিং করেন। লিলুফা হত্যার দায়ভার জাহাঙ্গীরের উপর চাপাতেই নাম ব্যবহার করেন। কারণ নিহত লিলুফা নিয়মিত জাহাঙ্গীরের দোকান থেকে কেনাকাটা করতেন। তাই তার সঙ্গে সখ্যতার বিষয়টি জানতেন দেলোয়ার।
পরে ১৬ জুন রাত ১০ টার দিকে চাঁদপুর থেকে মিতালি-৭ লঞ্চের ৩য় তলায় ৩০৯ নম্বর কেবিনে ওঠেন। লঞ্চ ছাড়ার পর রাত ১২টার দিকে লিলুফার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করেন দেলোয়ার। রাত অনুমান দেড়টার দিকে বিয়ে নিয়ে কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে লিলুফাকে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করেন দেলোয়ার।
লঞ্চ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহত লিলুফার দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে রাজধানীর গাবতলীতে এক আত্মীয়ের বাসায় যান। ১৭ তারিখ চাঁদপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে যান। ঘটনার ৯ দিন পর শ্রমিক ভিসায় ব্রুনাই চলে যান। চার বছর পর সেখান থেকে নিজের ভাগ্নের মাধ্যমে লিলুফা হত্যা মামলার খোঁজ খবর নিতে বলে।

মামলা শেষ করতে যদি টাকা পয়সাও লাগে সেটার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে বলেন। কিন্তু দেশে আসলে সমস্যা হবে না এমন আশ্বাস পেয়েই ব্রুনাই থেকে বাংলাদেশে আসেন দেলোয়ার মিজি। এরপর বিমান থেকে নামার পর ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

আরো পড়ুন  বদর দিবসের ইতিহাস আমাদের জানতে হবে ... মেয়র আ.স.ম. মাহবুব-উল আলম লিপন - Rknews71

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

শাহরাস্তির হাটপাড় প্রিমিয়ার লীগ (HPL) সিজন-১লং পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন
ফরিদগঞ্জে ফারিসা’র নয়া কমিটি সভাপতি মোতাহার হোসেন, সম্পাদক মহেশ শর্মা
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আজহারুল হক মুকুলের নেতৃত্বে মতলব উত্তরে ৩১ দফার রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লিফলেট বিতরণ
মতলব উত্তরের চরমাছুয়ায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
দেশ বদলাতে গিয়ে আমরা যাতে আগের অবস্থায় ফিরে না যাই: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন
কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি বন্ধ করতে হবে: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

আরও খবর

error: Content is protected !!