ফরিদগঞ্জে মিথ্যে গুজব ছড়িয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে পাগলী উপমা দিয়ে তার ওপর হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশিদের বিরুদ্ধে। উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মন্ত্রীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অমানবিক মারধরের শিকার ওই নারী ৪দিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুবিচারের দাবীতে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
সরেজমিন ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পারভিন বেগমের স্বামী ও সন্তান প্রবাসে থাকার সুবাদে ছোট সন্তানদের নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। সম্প্রতি তার সাথে একই বাড়ির সলেমান গংদের বাড়ির এজমালি পথ নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে প্রভাবশালী চক্রটির সাথে একই বাড়ির কয়েক যুবক একত্রিত হয়ে পারভিন বেগমকে মারধর করে। সুবিচার পেতে তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে অভিযুক্তরা ফরিদগঞ্জ থানায় এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, এঘটনায় একই পরিবারের পিতা-পুত্রসহ আট জনের বিরুদ্ধে পারভিন বেগম অভিযোগ করেছে। ওই রাতেই তারা বাড়ি ফিরে বাড়ির অন্যান্যদের কাছে পিতা-পুত্রসহ তারা আটজনে নাকি পারভীনকে লাঞ্ছিত ও ধর্ষণ করেছে এমন গুজব ছড়িয়ে দেয়। পরে বাড়ির অন্যান্যরাসহ ওই নারীকে পাগলী উপমা দিয়ে কেনো আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো এই জেরে তারা একত্রিত হয়ে পারভিনের উপর হামলা ও বসতবাড়ি ভাংচুর করে ওই নারীর মুঠোফোন ও গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে ওই নারীকে অবরুদ্ধ করে তার বসতঘরে তালা মেরে বের করে দেয়। অভিযুক্তরা হলো: সলেমান, নাছির, হুমায়ুন (২৫), জুয়েল (৩৫), রিয়াদ (৪০), রিপন (৪০), সবুজ (৪২) ও জাকির (৩৬)।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন পারভিন বেগম বলেন, আমার স্বামী ও সন্তান জীবিকার তাগিদে প্রবাসে থাকে। পরিবারের উন্নতির লক্ষে বাড়িতে হাঁস মুরগি লালন-পালন করে পরিবারের রুটি রোজগারে সহযোগীতা করে আসছি। আমার প্রতিপক্ষদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত আমার সম্পত্তিগত বিরোধ রয়েছে। এনিয়ে তারা একাধিকবার আমাকে পিটিয়েছে, আমার স্বামী-সন্তান দেশে না থাকায় তাদের পরামর্শে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, থানায় অভিযোগের কথা শুনেই আমার প্রতিপক্ষরা আমার উপর অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে। তারা আমার বসতঘরে ভাংচুর করেছে। কোনো সভ্য সমাজের পুরষরা অন্য নারীকে পেটাতে পারে না। আমি হামলার শিকার হয়ে একাধিকবার থানার আশ্রয় চেয়েও পাইনি।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তদের কাছ থেকে বাদীর বসতঘরের চাবী উদ্ধার করেছি। লুটকৃত বাকি মালামাল উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। বাদী চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাদী সুস্থ্য হলে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।