জসিম উদ্দিন, ফরিদগঞ্জ:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মুন্সিরহাট ভেলি ব্রিজ হতে গল্লাক বাজার পর্যন্ত প্রভাবশালী ও ভূমি দস্যুদের অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ডাকাতিয়া মৃতপ্রায়। ঐতিহ্য হারাচ্ছে প্রাচিন্তম এবং ঐতিহ্যবাহী ডাকাতিয়া নদী ।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাকাতিয়া নদীর দুইপাশে গড়ে ওঠা ইট বাটা বালুর মহল অবৈধ দখল আর দূষণে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ডাকাতিয়া।ভূমিদস্যুদের দখলদারিত্বের কারণে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে প্রমত্তা ডাকাতিয়া। নদীতে নেই মাছ। তাই বাপ-দাদার ব্যবসা নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেক জেলে। এসব জেলেদের দিন চলছে অনেক কষ্টে।
এক সময় এই নদীর উপর দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের মালামাল পরিবহন করা হতো ।এই নদীতে সকাল আর বিকাল জোয়ার ভাটা হইতো । কিন্তু এখন শুধু বর্ষাকালে জোয়ার ভাটা হতে দেখা যায় শুকনো মৌসুমে কোথাও কোথাও হাঁটুর নিচে পানি নেমে আসে। সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা করা না হলে এই নদী একসময় হারিয়ে যাবে।
একসময় নদীটির সৌন্দর্য দেখতে গ্রামে ছুটে আসতেন যান্ত্রিক শহরে থাকা মানুষগুলো। তারা মনের আনন্দে ছুটে যেত ডাকাতিয়ার পাড়ে দল বেঁধে অনেকে নৌকা যুগে দূর-দূরান্ত ছুটে যেত। অনেকে নদীর বুকেই করত বনভোজনের আয়োজন। নদীটির অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের হাতছানি বর্ষা মৌসুমে রূপ ছড়িয়ে দিলেও পানি কমার সাথে সাথে ডাকাতিয়া সৌন্দর্য হারাতে থাকে। আর এই সময় দখলদার ডাকাতিয়ার পাড় দখল করে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে।
নদীর তীরের আশেপাশের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে মশা মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়ে নানা-ব্যদি ছড়ায়। দীর্ঘ কয়েক বছর নদীটি খননা না করায় কোথাও কোথাও মরা খালে পরিণত হয়েছে। তখন নদীটির সুফল বঞ্চিত হয় নদী এলাকার কৃষক ব্যবসায়ী সহ ভ্রমণ পিপাসুরা।
ডাকাতিয়া খনন না হওয়ায় শুকনো মৌসুমে নদীটির যৌবন হারালেও বর্ষা মৌসুমে নদীটির সৌন্দর্য কিছুটা ফিরে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার মুন্সিরহাট কামতা ফনিসাইর বাগপুর ও গল্লাক বাজার এলাকার অনেকেই বলেন,নদী রক্ষায় বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টরা নানা প্রতিশ্রুতি শোনালেও এখন পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
বিভিন্ন ভাবে দখলদারিত্বের কারণে নাব্যতা হারাচ্ছে নদী। স্বাভাবিক পানি প্রবাহ আটকে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনও ব্যহত হচ্ছে।প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ডাকাতিয়া নদীটির বেশিরভাগ জায়গা দখল করে আছে কচুরিপানা।