একদিকে প্রচণ্ড গরম, তার মধ্যেই পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এ সময় শরীরে যেন পানিশূন্যতা না হয়, সেদিকে সবারই খেয়াল রাখা উচিত। তাই সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। একই সঙ্গে খনিজযুক্ত কিছু স্বাস্থ্যকর পানীয়ও পান করা উচিত, যাতে শরীরে খনিজের ভারসাম্যও বজায় থাকে। কারণ, গরমে ঘামের মাধ্যমে পানির সঙ্গে আমরা কিছু ইলেকট্রোলাইটও হারাই।
ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। আমরা সাধারণত ইফতার শুরু করি শরবত বা কোনো পানীয় দিয়ে। সেই পানীয় স্বাস্থ্যকর হওয়া চাই। দোকান থেকে কেনা চিনিযুক্ত জুস, কোমল পানীয় ইত্যাদি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আসুন জেনে নিই, রোজার এই সময় কী ধরনের পানীয় উপকারী—
● বাড়িতে তৈরি বিভিন্ন মৌসুমি ফল, যেমন পেঁপে, তরমুজ, কাঁচা বা পাকা আম ইত্যাদির জুস পান করতে পারেন। তবে এতে বাড়তি চিনি দেবেন না। কোনো সিরাপও যোগ করা চলবে না।
● টক দই দিয়ে তৈরি লাচ্ছি, মাঠা, ইসবগুলের শরবত, তোকমার শরবত, ডাবের পানি, লেবুপানি ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর পানীয়। ডায়াবেটিস বা স্থূলতা থাকলে চিনি ছাড়াই এসব পানীয় পান করা উচিত।
● যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাঁদের জন্য বেলের শরবত, দুধ–কলার শেক, পাকা পেঁপের জুস ইত্যাদি উপকারী। আলুবোখারার শরবতও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
● রক্তশূন্যতা থাকলে ডালিম বা বেদানার রস, বিটের জুস, গাজরের জুস; খেজুর, আম, আঙুর ইত্যাদি মিশিয়ে পাঞ্চ; কমলার রস পান করতে পারেন।
● যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি, তাঁরা বাঙ্গি, পেঁপে, বেলের শরবত পান করতে পারেন। আদাপানি বা জিনজার ড্রিংকস গ্যাস দূর করতে সহায়ক।
● কেবল শরবত বা জুসই নয়, পানিশূন্যতা দূর করতে শসা–টক দইয়ের ব্লেন্ড, সবজির স্যুপ, চিকেন স্যুপ, সবজির স্মুদি ইত্যাদিও খেতে পারেন।
● এক গ্লাস দুধে এক চিমটি হলুদ আর সামান্য গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে, যকৃতের জন্য উপকারী আর রাতে ভালো ঘুমও হয়।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়
● জুস তৈরির সময় ফল বা সবজির আঁশ ফেলে দেবেন না। তাহলে উপকারিতা অনেকটাই নষ্ট হবে।
● বাড়তি চিনি বা কৃত্রিম সিরাপ মেশাবেন না।
● প্যাকেটজাত বা বাণিজ্যিকভাবে তৈরি জুসে কৃত্রিম রং থাকে। কাজেই এগুলো ক্ষতিকর।
● জুস তৈরির আগে ফল বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। হাত সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে নিন। একই সঙ্গে জুস তৈরির সরঞ্জামও ভালো করে পরিষ্কার করুন।
● চা–কফি শরীরকে পানিশূন্য করে দেয়। কাজেই গরম আর রোজার এ সময় অতিরিক্ত চা–কফি পান থেকে বিরত থাকুন। কোমল পানীয়ও পানিশূন্যতা তৈরি করে।