চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আদালতের মীমাংসা উপেক্ষা করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আদালতের আশ্রয় নিয়েও প্রৈত্রিকসূত্রে পাওয়া জমি নিজের দখলে রাখতে পারছেননা অসহায় ইদ্রিস পাটওয়ারী। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও উপেক্ষিত হচ্ছেন অসুস্থ ইদ্রিস পাটওয়ারী। প্রতিপক্ষ শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ তুলছেন পেশি শক্তি প্রদর্শণ করে মাটি ফেলে জমি ভরাট এবং বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা করছেন।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে নিয়ম অনুযায়ী পৈত্রিক সম্পতি ভোগ দখল করে আসছিলেন ইদ্রিস মিয়া। কয়েক মাস আগে নিজের জমির পাশে একটি গাইড ওয়াল করেছিলেন তিনি। সেই গাইড ওয়াল সন্ত্রাসী কায়দায় একটি চক্র রাতের আঁধারে ভেঙ্গে দেয়। নিজের জমি রক্ষা এবং পাকা দেয়াল ভাংঙ্গার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন ইদ্রিস মিয়া। গত ১৪ জুলাই শফিকুর রহমান পিতা শরাফত আলী, মোশারফ হোসেন পিতা মৃত ওজিউল্লাহ পাটওয়ারী, কামরুন নাহার স্বামী শফিকুর রহমান ও অজ্ঞাত ৫/৬জনকে বিবাদী করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
জমির তপছিল ১৩৬নং ফরিদগঞ্জ মৌজার বি.এস ১৩৫৩নং খতিয়ানভুক্ত বি.এস ৭২৪ দাগের ৪ শতাংশ ভূমি পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত হয় ইদ্রিস মিয়া। যা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরিদগঞ্জ কর্তৃক নামজারী জমা খারিজ মামলা নং- ৩০৮৭ /২০২২-২৩ নামজারী খতিয়ান নং-২৮৯৪। নালিশী জমির তপছিল ০৪ শতাংশ ভূমির পূর্ব পাশে ৬৫ ফুট লম্বা। উক্ত জমির পশ্চিম পার্শ্বের পাকা দেওয়ালের অপর পাশে ইদ্রিস মিয়ার ভাই এর নিকট হইতে হিস্যার অতিরিক্ত জমি ক্রয় করেন শফিকুর রহমান। এ নিয়ে উভয়ের (ইদ্রিস-শফিক) মাজে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধ নিরশনে আদালতের দারস্ত হন ইদ্রিস মিয়া।
স্থানীয় লোকজন বলেন, আমাদের জানা মতে পৈত্রিক সূত্রে এই জমির মালিক ইদ্রিছ মিয়া। মো. সফিক কোন ক্ষমতা বলে তার জমি দখল করার পায়তারা করছে আমরা জানিনা। সফিক মিয়া ক্ষমতা দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্ঠা করছে।
ভুক্তভোগি ইদ্রিস মিয়া বলেন- এই জমি পৈত্রিক সূত্রে আমি মালিক। আমার ভাইয়ের কাছ থেকে কৌশলে হিস্যার অতিরিক্ত জমি ক্রয় করেন শফিক। এ বিষয়ে আদালতে মামলার মাধ্যমে সোলেনামা করে জমি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু শফিক তার চেয়ে অতিরিক্ত জমি দখল করার জন্য আমার করা গাইড ওয়াল ভেঙ্গে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে আদালতের সরনাপন্ন হই। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ১৪৫ ধারা জারি করে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য শক্তির বলে সে নিষেধাজ্ঞাটি বাস্তাবায়ন করেননি থানা পুলিশ। কয়েকদিন পর তারা আপিল করে নিষেদাঙ্গা তুলে এনে জমি দখলের চেষ্টা করে। আমি ৯৯৯ এ কল দিলে এস.আই মাহফুজের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর শফিক তার দলবল নিয়ে আবার দখল করতে থাকে।
মো.শফিকুর রহমান বলেন- আমি ইদ্রিস মিয়ার ভাই ইসমাইল পাটওয়ারীর কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি ক্রয় করি। ইসমাইল পাটওয়ারী হিস্যা অনুসারে ৮ শতক জমি না পাওয়ায় পরবর্তীতে ২০১৪ সালের আদালতের মাধ্যমে সোলেনামা করে ৭ শতক জমি আমাকে দেওয়া হয়। যার মুখ ৩৮ ফিট, লম্বায় ৮১ ফিট, চৌহদ্দিতে ৭ শতক জমি বুজিয়ে দেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন- দেওয়াল কে ভেঙ্গেছে আমরা জানি না। কিন্তু দেওয়ালটি আমাদের জমির উপর করা হয়েছে।
এস.আই মাহফুজ বলেন- কল পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি আদালতের আদেশ পেয়ে জমি যার দখলে সে মাটি ভরাট করতেছে। এ বিষয়ে এস.আই মাহবুব ভালো বলতে পারবে।
এস.আই মাহবুব বলেন- এ জমির উপর ১৪৫ ধারা জারি আছে জানি কিন্তু বিস্তারিত আমি জানি না। মামলাটি কে দেখছেন আমি জানিনা।
উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন গাজী বলেন- বিষয়টি নিয়ে আমরা তাদের পারিবারিক বৈঠকে বসে মীমাংসা করে দেই। আমরা যেভাবে তাদের অংশিদারদের মধ্যে বন্টক করে দিয়েছি মহামান্য আদালতও ঠিক সেভাবে রায় দিয়েছেন কিন্তু কেন তারা আদালতের আদেশ অমান্য করছেন বুঝতে পারছিনা।