নতুন বছরের দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও হাজীগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক ও দাখিলের শিক্ষার্থীরা এখনও তাদের হাতে নতুন বই পায়নি। বিশেষ করে মাধ্যমিকের নবম শ্রেণি এবং দাখিলের অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই ছাড়াই ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। বই বিতরণের এই ধীরগতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরে ৩ লক্ষ ১০ হাজার ৮৫০টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাত্র ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩৯০টি বই বিতরণ করা হয়েছে, যা মোট চাহিদার মাত্র ৪৬.১৩ শতাংশ। তবে নবম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থীকেই এখন পর্যন্ত নতুন বই দেওয়া হয়নি।
ইবতেদায়ি স্তরে ৮৩ হাজার ৬০০টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৩৮০টি বই, যা চাহিদার মাত্র ৩০.৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে, দাখিল স্তরে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৮০টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৫টি বই, যা মোট চাহিদার মাত্র ২১.০৯ শতাংশ। এছাড়াও দাখিলের অষ্টম ও নবম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থীকেই এখন পর্যন্ত নতুন বই দেওয়া হয়নি।
উপজেলার মাধ্যমিক ও দাখিল স্তরের মোট বইয়ের চাহিদা ৬ লক্ষ ১২ হাজার ৯৩০টি। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৪৫টি বই, যা মোট চাহিদার মাত্র ৩৫ শতাংশ।
লামিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলছেন, এবারের বইগুলো একটু দেরিতে আমরা হাতে পাচ্ছি। এতে পড়াশোনার কিছুটা হলেও ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ সময় তো চলে যাচ্ছে। এখনো বলা যাচ্ছে না সবগুলো বই কবে নাগাদ হাতে পাব। আমি চাই দ্রুত আমাদের বইগুলো যাতে আমাদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, বই ছাড়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত বই বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বই বিতরণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে এখনও বই পৌঁছানোর সুনির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমাদের গোডাউনে কোন বই নাই। বই আসতেছে। আমরা স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছি।
এই বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ) রিফাত জাহান বলেন, যে সব বই আসছে, সাথে সাথে বিতরণ করা হচ্ছে। আশাবাদী দ্রুত সময়ে সব বই চলে আসবে এবং আসার সাথেসাথে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেব।