চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস জাতীয় মেডিসিন দিয়ে গর্ভে বাছুর বহন করা দু’টি গরু মেরেফেলে। গরুর মালিক ও স্থানীয়দের সন্দেহ, অতিরিক্ত নেশা জাতীয় মেডিসিন দিয়ে গরু চিন্তাই করতে গিয়ে গরু দু’টি মারা যায়।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের আসৎকুয়ারী গ্রামে মরহুম আব্দুল মতিন খান বাড়ির কার্তিক দের একটি গরু। গরুটি গত ৫ মাস দরে গর্ভে বাছুর বহন করছে। অপর গরুটি একই গ্রামের হুতার বাড়ির মনা খলিফার ছেলে অমলদের গরু। এগরুটিও ৭ মাস দরে গর্ভে বাছুর বহন করছে।
স্থানীয় ডাঃ আব্দুল কাদের খান সোহাগ, নান্নু দেওয়ান, আরিফ দেওয়ান বলেন, গত ৩ মাসে দক্ষিণ শাশিয়ালী ১টি গরু ও আসৎকুয়ারী গ্রামে ৪টি গরু চুরি হয়। এর মধ্যে অমলদের একটি গরু ছিলো। গতরাতে তার একটি গরু মারা যায়, এটা খুবই দুঃখ জনক। আমরা যতদুর জান্তে পেরেছি, গরু দু’টি নেশা জাতীয় মেডিসিন বা গ্যাস/বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে। সম্ভাবত গরু দু’টি চুরি করতে এসেছে। কে বা কাহারা এঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করি।
দুই জনের পরিবার দারিদ্র সীমার মধ্যে বসবাস করে। তাদের সহযোগীতা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। সকলের কাছে অনুরোধ, তাদের পাশে এসে দাঁড়ান।
কার্তিক দে ও তার স্ত্রী বলেন, সন্ধা রাতে সুস্থ গরুকে খাবা দিয়েছি, পরে রাত ১০টায় দিয়েছে, এর পরে আমরা ঘুমাইতে গেছি, আবার রাত ২টা বাজে উঠে দেখি গরু ঠিক আছে কিনা, কারন প্রায় সময় গরু চুরির খবর শোনা যায়, চোরের ভয়ে মধ্য রাতে চেক করি। সুস্থ গরুকে খড় দিয়ে আমরা ঘুমাইতে গেছি। যখন ফজরের আযান দেয়, তখন গরুর ডাক শোনা যাচ্ছে, জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। দৌড়ে এসে দেখি মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। এর মধ্যে গরু লুটে পড়ে মারা গেছে। গরুটি আমরা পাশ্ববর্তী বাড়ির জিতু গাজি থেকে ইজাড়া হিসেবে এনেছি। কারন আমাদের গরু কিনার সামর্থ্য নাই।
অমল দে, আমার দু’টি গরু ছিলো, গত দুই মাস আগে একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এগরুটিই একমাত্র সম্বল। তাও নেশা জাতীয় গ্যাস দিয়ে গরুটিকে মেরেফেলেছে। গোয়াল ঘরের ভিতরে দুইটা গ্যাস জাতীয় ঔষধ পেলাম, এটা কেউ ইচ্ছাকৃত করেছে। না হয় সুস্থ গরু এভাবে মারা যায়। আমার গতকালও সন্দেহ হয়েছে কেউ গরুকে গ্যাস ঔষধ দিয়েছে, পরে ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ খাওয়াছি। ৭ মাস গরুর গর্ভে বাছুর। অনেক টাকা খরচ করেছি গরুর পিছনে। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি। তার মধ্যে এঘটা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুকবুল হোসেন বলেন, আমি ঘটনা শোনে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, এটা খুবই দুঃখ জনক, তারা উভয় গরীব পরিবার। একই সাথে এক রাতে গরু দু’টি মারা যাওয়া সন্দেহজনক, কারা এর সাথে জড়িত বা কিভাবে ঘটেছে তা নিশ্চিত না। এছাড়া এলাকায় গত দুই তিন মাসের মধ্যে ৫টা গরু চুরি হয়েছে। সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এবং তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য বিত্তবানদের আহ্বান করছি।