জসিম উদ্দিন:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি মাঠ জুড়ে চার দিকে হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুনঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ তেমনি বাম্পার ফলনের হাতছানিতে উপজেলার কৃষকের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকরা । মৌসুমী সরিষার চাষ লাভজনক হওয়ায় চলতি মৌসুমে আবাদে মনোযোগ দিয়েছেন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা।
প্রকৃতিজুড়ে বইছে এখন শীতের হাওয়া। আর এই শীতের হাওয়ার মধ্যে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত এলাকা। এমন চোখ জুড়ানো হলুদের মেলা প্রকৃতিকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে গুন গুন করে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছিরা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ক্ষেতের পর ক্ষেতে সরিষা ফুলের এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্যের দেখা মিলবে। সেইসঙ্গে কৃষকরাও এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। যদি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ না করে তাহলে এবার তাদের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ফরিদগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, উপজেলায় এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হচ্ছে। গত বছর থেকে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। সেই কারণে এবার সরিষার চাষ বাড়িয়েছেন কৃষকরা।
শনিবার(৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে কথাহয় উপজেলার ২ নং বালীথুবা পূর্ব ইউনিয়নের শহিদ সৈয়দ নগর এলাকার কৃষক আলমগীর ছৈয়াল বলেন, চলতি মৌসুমে সার বীজ কীটনাশক সরবরাহের পাশাপাশি জমিতে সরিষা চাষ করেছি ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।এরপর সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে বোরোধান লাগাবো ।এটা আমার জমিতে দ্বিতীয় ফসল।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল বারেক বলেন,গতবছর অল্প কিছু জমিতে সরিষার চাষ করেছিলাম। এবার জমিতে সরিষার আবাদ বাড়িয়েছি । সেইসঙ্গে এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি এরকম থাকে তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে।
গুপ্তি পুর্ব ইউনিয়নের কৃষক সেলিম কাজী নামে এক কৃষক বলেন, আমি আলিশান কাটার পর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে এবার অনেক লাভবান হতে পারবো। বলা যায়, এ বছর বাম্পার ফলন হবে সরিষার। এবছর সঠিক সময় উপজেলা কৃষি অফিসে সরকার থেকে বীজ দিয়েছে, যে কারণে অনেকেই সরিষার চাষ করেছেন।
পাইকপাড়া উওর ইউনিয়নের আরেক কৃষক আবুল বাশার বলেন, কম সময়ের মধ্যেই সরিষা ঘরে তোলা যায়। সেইসঙ্গে খরচও তেমন হয় না। এবার মেঘ বৃষ্টি থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে ফলন অনেক বেশি হবে, যা অন্য কোনো বছর হয়নি।
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় এবছর সরিষার চাষ করা হয়েছে। মাঠের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে টার্গেটের চেয়েও বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে আবহাওয়ার পরিস্থিতি যেমন আছে, পরেও এরকম থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে।