এই সড়কটির এক কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণ হবে। ঠিকাদার বক্স কেটে বালি ফেলে প্রায় দুই বছর ধরে কাজ বন্ধ রেখেছেন। অপরটি হচ্ছে বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা-কামরাঙ্গা-রামপুর সড়ক। এই সড়কটিও প্রায় দুই বছর ধরে পড়ে আছে। এর মধ্যে তিন মাস সড়কে ইট ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার ও এলজিইডির গাফিলতির কারণে লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই তৎকালীন সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের কুড়ুলী দেবিপুর নূরানী মাদ্রাসা থেকে রামচন্দ্রপুর ভুইয়া একাডেমি (উচ্চ বিদ্যালয়) পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ (কার্পেটিং) কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর নির্মাণকাজের নামে কাঁচা সড়কটিতে বক্স কেটে ইট ও বালু ফেলে রেখেছেন জাকির হোসেন নামের ফরিদগঞ্জের এক ঠিকাদার।
অপর দিকে একই বছরের ৩১ অক্টোবর বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা-কামরাঙ্গা-রামপুর সড়কের প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের (কার্পেটিং) কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম। এরপর নির্মাণ কাজের নামে সড়কটিতে বালু ও ইট ফেলে রেখেছেন আব্দুল কাদের নামের হাজীগঞ্জের এক ঠিকাদার। এতে সড়ক দুইটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়।
নিজ নিজ এলাকার স্থানীয় ও এলাকাবাসী জানায়, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুইটির কাজ শুরু হওয়ায় তারা প্রথমে আনন্দিত ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় এখন তাদের চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। তারা বলেন, ‘কাজ শুরুর আগে সড়ক দিয়ে কোনোভাবে চলাচল করা যেত। কিন্তু এখন তো পুরো রাস্তা খোঁড়া। তাদের চলাই দায় হয়ে গেছে।
বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের কুড়ুলী-দেবিপুর এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল জলিল, দেলোয়ার হোসেন, সফিক, পারভীন বেগম জানান, গত দ্ইু বছর ধরে রাস্তার বক্স কেটে ইট-বালু ফেলে রেখেছে। এতে পাঁয়ে হেটে চলাচল করতে পারলেও গাড়ি নিয়ে চলাফেরার সুযোগ নেই। আর গাড়ি চলাচল করতে না পারায় মালামাল পরিবহন-তো দূরের কথা, অসুস্থ রোগী, গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মা-বোনদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্বজনরা।
একই অভিযোগ করে বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা ও কামরাঙ্গার এলাকার বিমলেন্দু, খোকন ও কুলসুমা বেগম জানান, কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য গাড়ি পেতে কষ্ট করতে হয়। রোগী ও মালামাল পরিবহন করতে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিতে হয়। এছাড়াও সড়ক দুইটি দিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
ঠিকাদার জাকির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঈদের আগেই কাজ সম্পন্ন করে দিবেন। তবে কোন ঈদের (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) আগে শেষ করবেন, তা তিনি বলেন নি।
অপর দিকে ঠিকাদার আব্দুল কাদের বলেন, কাজ-তো শেষের পথে। এখন ফিনিংশের কাজ ও কার্পেটিং (পিচ ঢালাই) বাকী আছে। ঈদের পর ওই কাজটাও সম্পন্ন করে দিবো।
এ বিষয়ে বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন হেলাল জানান, ঠিকাদারের সাথে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। তিনি কাজ করে দেই-দিচ্ছি বলেই যাচ্ছেন, কিন্তু কাজ করাচ্ছেন না। সবশেষ বলেছেন, ঈদের আগে কাজ শেষ করে দিবেন।
বাকিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘ চেষ্টার পর রাস্তাটি পাকাকরণের অনুমোদন ও টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ না করায় প্রায় দুই বছর ধরে কাজটি পড়ে আছে। এতে করে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লোকজনের আসা-যাওয়া করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আজিজুল হক বলেন, রাস্তা দুইটি দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।